ঢাকা: ২০১৭ সালে জতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে সুখি দেশ নরওয়ে। যারা গত বছরেই এ তালিকার চতুর্থস্থানে ছিলো। যার কারণে সবারই মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, দেশটি কী এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যে এক বছরের ব্যবধানেই তালিকার শীর্ষে উঠে এলো? ইতোমধ্যেই বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে জরিপ শুরু করে দিয়েছে। মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে ব্রিটেনের গণমাধ্যমগুলোর! গার্ডিয়ান তার জরিপ এভাবে ছুঁড়ে দিয়েছে, ‘যারা নরওয়েতে বাস করেন, তারা বলেন কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে সুখি দেশ হলো নরওয়ে?’।
ফেব্রুয়ারি মাস ব্যাপি সংযুক্ত আরব আমিরাতে জাতিসংঘের ‘সুখি কমিটি’- এর বৈঠক শেষে ২০ মার্চ এ ঘোষণা দেয়া হয়। ওই তালিকার শীর্ষ পাঁচে আছে নরডিক অঞ্চলের দেশ নরওয়ে, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইর্জারল্যান্ড এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড। এ তালিকার ১৪তম স্থানে রাখা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। যেখানে বলা হয়েছে ‘দেশটিতে দিন দিন সুখ কমে যাচ্ছে’।
কিন্তু নরওয়েতে এত সুখের কারণ কী? তালিকাটি তৈরির সময় সংশ্লিষ্ট দেশের আর্থ-সামাজিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেও দেখা হয়েছে। একটি দেশ অন্য দেশের চেয়ে কেন বেশি সুখী। এই বিশ্লেষণে দেশের অর্থনৈতিক শক্তি (দেশজ সম্পদ) , সামাজিক নিরাপত্তা, গড় আয়ু, ব্যক্তি স্বাধীনতা, দুর্নীতি নিয়ে ধারণা।
রিপোর্ট প্রকাশকারী সাসটেইনেবল ডিভলোপমেন্ট সলুশন নেটওয়ার্কের (এসডিএসএন) পরিচালক ও জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ উপদেষ্টা জেফ্রে স্যাকস বলেন, যেসব দেশে সমৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য আছে, অর্থাৎ যেসব দেশে সমাজের চূড়ান্ত পর্যায়ের আস্থা আছে, অসমতা কম ও সরকারের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা আছে—সেসব দেশ সাধারণ মাপকাঠিতে সুখী দেশ।
এ ছাড়াও নরওয়ের জিডিপি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও দেশটিকে সুখিও সমৃদ্ধশালী করে তুলেছে। সাধাণত দেশটি উত্তরমেরুতে হওয়াতে এখানকার আবহাওয়াও শীতল তাই এখানকার প্রাকৃতিক সুন্দর্যও তুলনামূলক বেশি। সেই সাথে দেশটির মানুষের মেজাজও ঠাণ্ডা। তাই দেশটি সবাচেয়ে সুখি।
তাছাড়া দেশটির অবকাঠামো, প্রযুক্তির উন্নয়ন, ইতিবাচক পররাষ্ট্রনীতি ও ধর্মীয় স্বাধীনতাও (যার ফলে দেশটিতে ধর্মীয় কোন দাঙ্গাও নেই) সুখি হওয়ার পিছনে কাজ করেছে।
নরওয়ের রাজনীতি: ব্রিটেনের মতই দেশটির সর্বোচ্চ ক্ষমতা রাজার হাতে থাকে। তার প্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করে। ভোটের মাধ্যমে এই প্রতিনিধি নিয়োগ হয়ে থাকে। ২০১৩ সাল থেকে কনজারভেটিভ পার্টির এরনা সোলবার্গ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করছে।
মূলতই দেশটির প্রধান দুটি দল কনজারভেটিভ পার্টি এবং লিবার পার্টির মধ্যে নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়। এখানে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে কোন রকম দ্বন্দ্ব-সংঘাত হয় না। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং উইকিপিডিয়া।
সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই