ঢাকা: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর প্রাণরক্ষায় সাবেক প্রধান বিচারপতি, আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি, বিচারক, সাবেক স্পিকার, সাবেক ডেপুটিস্পিকার, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ ৬২৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়।
তাদের মধ্যে বিচার সংশ্লিষ্ট ৫ কর্মকর্তা এবং প্রশাসন ক্যাডারের ১৪ কর্মকর্তা ছিলেন। এ বিষয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
প্রশাসন ক্যাডারের ১৪ কর্মকর্তা হলেন, বগুড়ার সাবেক জেলা প্রশাসক বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: সাইফুল ইসলাম, বগুড়ার শাহজাহানপুরের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমানে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এর উপপরিচালক মুহসিয়া তাবাসসুম, চট্রগ্রামের সাবেক বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, চট্রগ্রামের রাউজানের সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্তমানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক অংগ্যজাই মারমা, রাউজানের সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বর্তমানে চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো: রিদুয়ানুল ইসলাম, কুমিল্লার সাবেক ডিসি বর্তমানে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালক খন্দকার মু: মুশফিকুর রহমান, টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমানে পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ, একই উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) বর্তমানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক ফাহিমা বিনতে আখতার, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: এরশাদ মিয়া, একই উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) বর্তমানে ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: শোয়েব শাত-ঈল-ইভান, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমানে নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: তারিকুল ইসলাম, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমানে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: তৌহিদুল ইসলাম, একই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: সাইদুল ইসলাম, সিলেটের সাবেক বিভাগীয় কমিশনার বর্তমানে বাংলাদেশ তাতবোর্ডের চেয়ারম্যান আবু আহমদ ছিদ্দীকী।
অধস্তন আদালতের এই ৩ জন বিচারক হলেন- ময়মনসিংহের সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন যিনি বর্তমানে গাজীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে কর্মরত আছেন, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কাজী মিজানুর রহমান যিনি বর্তমানে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চট্টগ্রামে কর্মরত আছেন, আরেকজন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আল আমিন যিনি নাটোরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত আছেন।
[249823]
আর উচ্চ আদালতের ২ জন বিচারপতির মধ্যে একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এনায়েতুর রহিম। বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান তুলে ধরা হয়।
আইএসপিআর জানায়, আশ্রয় দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন- উচ্চ আদালতের ২ জন বিচারপতি ও অধস্তন আদালতের ৩ জন বিচারক, ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ১৯ জন বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার পরিজনসহ (স্ত্রী ও শিশু) সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল। সেসময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।
পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই এক দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ/মামলার ভিত্তিতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট আইএসপিআর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। একই দিন ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
এআর