গণঅভ্যুত্থানের দালিলিক ভিত্তি ‘জুলাই সনদ’

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৯:১৯ এএম

জুলাই সনদকে বিশ্লেষকদের অনেকে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের দালিলিক ভিত্তি হিসেবে দেখছেন। এই সনদ কেবল একটি রাজনৈতিক প্রস্তাবনা নয়, বরং গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামোর রূপরেখা বলেই বিবেচিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় খসড়া প্রস্তাবনা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে, যাতে তারা মতামত জানাতে পারে।

খসড়ার প্রস্তাবনায় বিস্তৃতভাবে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা, ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন এবং বিগত সময়ে গুম-খুন ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের মতো ঘটনাগুলোকে এতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ঘটনাকে প্রমাণ হিসেবে হাজির করে বলা হয়েছে—রাষ্ট্র ও সমাজের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য একটি সর্বজনীন সনদের প্রয়োজনীয়তা আজ অনস্বীকার্য।

খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন রাজনৈতিক দল কোন কোন বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে তা স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকবে। সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতেই জুলাই সনদকে বাস্তবায়নযোগ্য দলিল হিসেবে ঘোষণা করা হবে। অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, সনদটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং এর বিধান-নীতি ও সিদ্ধান্ত অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য পাবে। এমনকি অন্য কোনো আইনে ভিন্ন ব্যাখ্যা থাকলেও জুলাই সনদের সুপারিশই কার্যকর হবে।

সনদ-সম্পর্কিত যে কোনো বিরোধ বা প্রশ্নের নিষ্পত্তির এখতিয়ার এককভাবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের হাতে ন্যস্ত করার প্রস্তাবও এতে রাখা হয়েছে। বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা কিংবা জারির কর্তৃত্ব নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকবে না বলেও খসড়ায় উল্লেখ আছে।

অঙ্গীকারনামায় জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করা হয়েছে। অতীতের হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদ পরিবারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সহায়তা প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করার বিষয়টিও সেখানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এই সনদকে অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য দলিল হিসেবে গণ্য করা হবে। কালক্ষেপণ না করে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এর পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

খসড়া প্রস্তাবনার ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই চাওয়া হয়েছে, যাতে জুলাই সনদকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া যায়।

ওএফ