‘আমি ইতিহাস বদলাতে চাই’

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০১৬, ০৩:০৯ পিএম

আর্জেন্টিনার দীর্ঘ ২৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটানোর দ্বারপ্রান্তে অপেক্ষা করছে লিওনেল মেসিরা। আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় কোপা আমেরিকার শতবর্ষীয় আসরের ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে চিলির। আর এ ম্যাচের আগে মেসির কন্ঠে একটি ধ্বনিই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে, তা হল ‘জয়’।

মেসির ব্যক্তিগত অর্জন অনেক। ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে জয় করেছেন মোট ২৮টি শিরোপা। হয়েছেন পাঁচবারের ব্যলন ডি’অর বিজয়ী। কিন্তু তার ক্যারিয়ারে আক্ষেপ একটাই। নিজ দেশ আর্জেন্টিনার হয়ে বড় কোন শিরোপা জিততে না পারা।

কোপার গত দুই আসরেও ফাইনালে উঠেছিল মেসির আর্জেন্টিনা। ২০১৫ সালের ফাইনালে তাদের একই প্রতিপক্ষ ছিল, চিলি। ওই ফাইনালে ট্রাইব্রেকারে হেরে সেবার তাদের রানার্স আপ হয়েই থাকতে হয়েছে। তবে এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান না মেসি। ম্যাচের আগে প্রত্যয় মেসি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখন আসলে অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সময় নেই। কারণ আমরা যে লক্ষ্য পূরণে এখানে এসেছি তার খুব কাছাকাছিই চলে এসেছি। গত এক বছরে আমাদের দলে অনেক পরিপূর্ণতা এসেছে। এখন আমরা সবাই ফাইনাল ম্যাচটি খেলার জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করছি।’

আসলে মেসির কাছে এটা শুধু একটি ফাইনাল ম্যাচ নয়। এর সঙ্গে জুড়ে আছে আরও অনেক কিছু। তিনি এ মুহূর্তে ব্যক্তিগত অর্জন নিয়েও মোটেও আপ্লুত নন। দেশের হয়ে বড় কোন শিরোপা অর্জনে বিভোর হয়ে আছেন তিনি। তার নামের পাশে লেখা হয়ে আছে তিনি দেশের হয়ে বড় কোন শিরোপা এখনও অর্জন করতে পারেননি। এ অতৃপ্তি ঘুচাতে চান তিনি।

ফাইনাল পর্যন্ত মেসি দলকে ঠিকই টেনে নিয়ে যান। তবে এরপরই যেন সব গোলমাল বেধে যায়। তবে এবার মেসি অনেক আশাবদী। তিনি বলেন, ‘আমি ইতিহাস বদলাতে চাই। জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা জিততে চাই। পুরো আসরেই আমরা দারুণ খেলেছি। এবারের শিরোপার যোগ্য দাবিদার আমরাই।’

সেই সঙ্গে মেসি আরও মনে করিয়ে দেন, পরপর তিনবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা না পাওয়া আসলে ব্যর্থতার থেকেও বেশি হতাশার। তবে এবার আমরা নিজেদের ওপর খুব একটা চাপ নিচ্ছি না। আশা করি আমরাই জিতব।

তবে ফাইনাল ম্যাচের আগে কিন্তু আর্জেন্টিনা শিবিরে খুব একটা স্বস্তি নেই। দলের অন্যতম তারকা এজিকিয়েল লাভেজ্জি গত ম্যাচে আঘাত পেয়েছেন। ফলে তিনি ফাইনালে থাকতে পারছেন না। এছাড়া অগাস্টিন ফার্নান্দেজও চোট পেয়ে ছিটকে পড়েছেন টুর্নামেন্ট থেকে। অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, মার্কাস রোহো ও নিকোলাস গাইতানকে নিয়েও সংশয় রয়েছে।

শুক্রবার (২৪ জুন) মেসি ২৯ বছরে পা রেখেছেন। এ জন্মদিনের আগ পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন ৫৩১টি। নিজের সংগ্রহে জমা করেছেন ৪৫৩টি গোল। কোপার আসরে ৫ গোল করার মধ্য দিয়ে গড়েছেন আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতার (৫৫টি গোল) রেকর্ড। পেছনে ফেলেছেন ৫৪ গোল করা নিজ দেশের গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে।

তাইতো সবকিছু ছাপিয়ে মেসিই এখন দলের অন্যতম প্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। দলের সকলেরই তার ওপর অগাধ আস্থা। দলের গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো বলেন, ‘আমরা তাকে (মেসি) নিয়ে গর্বিত। সে বিশ্বসেরা, এটা প্রমাণ করেছে। আমাদের সামনে তার আর কিছু প্রমাণ করার দরকার নেই। ১০ নম্বর জার্সিধারী মেসিই আমাদের নেতা।’

সকলের প্রেরণার উৎস মেসি কি এবার পারবেন ফাইনালের বাধা অতিক্রম করে শিরোপার স্বাদ দিতে দলকে। দলের ২৩ বছরের আক্ষেপ ঘুচাতে? এমন অনেক প্রশ্ন এসেই ভিড় করছে তার ভক্ত-সমর্থকদের মনে। তবে এ সকল প্রশ্নের জবাব পেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ফাইনাল ম্যাচটির জন্য।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই