ঢাকা: সবাই এককাট্টা হয়ে জীবন বাজি রেখে খেললে কি হয় সেটি দেখা গিয়েছিল ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে। পুরো আর্জেন্টিনা দলের একটাই টার্গেট ছিল মেসিকে বিশ্বকাপ জেতাবেন।
সবাই মিলে নিজেদের উজাড় করে দিয়ে প্রিয় তারকাকে উপহার দিয়েছিলেন সোনালী ট্রফি। বেঙ্গালুরুর গল্পও যেন ঠিক সেরকম। দলটির অধিনায়কও ম্যাচের আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন কোহলির জন্য হলেও শিরোপা জিততে চাই। সবাই মিলে সেটি করলেনও।
একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলের শুরু থেকে একই দলের হয়ে খেলছেন যিনি, মৌসুমের পর মৌসুম ব্যাট হাতে অতিমানবীয় ধারাবাহিকতা যার, টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান ভিরাট কোহলি ১৮ বারের চেষ্টায় অবশেষে পেলেন শিরোপার স্বাদ, দীর্ঘ অপেক্ষা ঘুচল বেঙ্গালুরুর।
ম্যাচ শেষ হতেই হাঁটু গেঁড়ে মাটিতে বসে পড়েন কোহলি, নিচু করে থাকেন মাথা। একটু পর তাকে ঘিরেই উদযাপনে মেতে ওঠে বেঙ্গালুরুর অন্য ক্রিকেটাররা। বেঙ্গালুরুর সাবেক ব্যাটসম্যান, দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট এবি ডি ভিলিয়ার্স মাঠে নেমে জড়িয়ে ধরেন বন্ধু কোহলিকে।
এই মাঠেই একদিন আগে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিতেছিল পাঞ্জাব। শিরোপা লড়াইয়ে বেঙ্গালুরুর ইনিংস ১৯০ রানে থামল যখন, তাদের নিয়ে বাজি ধরার লোক হয়তো খুব বেশি ছিল না। ‘২০-২৫ রান’ কমে হয়ে গেছে বলেই আলোচনা হচ্ছিল বেশি। উইকেটও ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল ভালো।
শেষ পর্যন্ত ফাইনালের চাপটাই হয়তো নিতে পারল না পাঞ্জাব। ম্যাচের শেষ চার বলে শাশাঙ্ক সিংয়ের তিনটি ছক্কা ও একটি চারের পরও ১৮৪ রানে আটকে গেল শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বাধীন দল। প্রথম শিরোপার অপেক্ষা আরও বাড়ল ফ্র্যাঞ্চাইজিটির।
বেঙ্গালুরুর ইনিংসে ব্যক্তিগত ফিফটি যেমন নেই, তেমনি নেই কোনো পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটিও। ৩ চারে কোহলির ৩৫ বলে ৪৩ রান তাদের সর্বোচ্চ।
দলটির হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন হার্দিক পান্ডিয়ার ভাই ক্রুনাল পান্ডিয়া। ৪ ওভারে স্রেফ ১৭ রান দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নেন ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার।
[250365]
রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে, কেভিন পিটারসেন, শেন ওয়াটসন, ড্যানিয়েল ভেটোরি, কোহলি, ফাফ দু প্লেসি- বড় বড় সব তারকা নেতৃত্ব দিয়ে যেখানে বেঙ্গালুরুরকে আইপিএল জেতাতে পারেননি, সেখানে দলটির অধিনায়কত্ব পেয়ে প্রথম আসরেই বাজিমাত করলেন রাজাত পাতিদার, যিনি বড় কোনো নাম নন ভারতীয় ক্রিকেটে।
কোহলির বেঙ্গালুরু আগে ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে তুলেছিল ১৯০ রান। জবাবে পাঞ্জাব করতে পেরেছে ৭ উইকেটে ১৮৪। জয়ের ব্যবধানটা ৬ রান হলেও পাঞ্জাব ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে কয়েক ওভার আগেই।
১৯০ রান আইপিএলে অনেক বড় কোনো সংগ্রহ নয়। এবারের আইপিএলে আহমেদাবাদে প্রথম ইনিংসে এটিই সর্বনিম্ন সংগ্রহ। তবে স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়ার ৪ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট আর ফাইনালের চাপেই যেন হেরে গেছে পাঞ্জাব।
ওপেনার প্রভসিমরান সিং, প্রিয়াংশ আর্য থেকে শুরু করে নেহাল ওয়াধেরা-সবাই যেন খোলসবন্দী ছিলেন। প্রিয়াংশ করেন ১৯ বলে ২৪, প্রভসিমরান ২২ বলে ২৬। তবে পাঞ্জাবের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করেছেন ওয়াধেরা। ১৮ বলে তার ১৫ রানের মন্থর ইনিংসেই পাঞ্জাব অনেকটা পিছিয়ে পড়ে।
ব্যতিক্রম ছিলেন জশ ইংলিস। ২৩ বলে ৩৯ রান করে পান্ডিয়ার বলে যখন তিনি আউট হন তখন পাঞ্জাবের দরকার ৪৭ বলে ৯৩। ভুবনেশ্বর কুমার, জশ হ্যাজলউডদের বিপক্ষে এই রান করা সহজ ছিল না। সেটা তারা পারেওনি।
এআর