কেমন ছিল প্রথম ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ?

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৪, ২০১৯, ১০:০৩ পিএম
ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: ১৯৭১ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট চালু হওয়ার চার বছর পর ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ সালে। সেই বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল ইংল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে প্রবল পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আটটি দেশের অংশগ্রহণে ৭ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ১৫ দিন ধরে চলে ক্রিকেটের প্রথম বিশ্ব আসর।

প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার ৯৪ বছর পর ১৯৭১ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটের শুরু হওয়া ছিল একট বিপ্লবের মতোই। তবে ক্রিকেটের সীমিত ওভারের এই ফরম্যাটের বানিজ্যিক সম্ভাবনা ও দর্শকদের কাছে এর আবেদনের বিষয়টি চিন্তা করেই ১৯৭৫ সালে আরও একটি বিপ্লব দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। প্রথমবারের মতো আইসিসি আয়োজন করে বিশ্বকাপ ক্রিকেট।

স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও অন্য পাঁচটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তানের সাথে অংশগ্রহণ করে শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব আফ্রিকা। তখন অবশ্য বিশ্বকাপকে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের নামে বলা হতো প্রুডেনশিয়াল বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডের ছয়টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় টুর্নামেন্টের ১৫টি ম্যাচ। নিউজিল্যান্ডের গ্লেন টার্নার ৩৩৩ রান করে আসরের সর্বোচ্চ রান ও অস্ট্রেলিয়ার গ্যারী গিলমোর ১১ উইকেট তুলে নিয়ে হন টুর্নামেন্টের সেরা বোলার।

গ্রুপ ‘এ’ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া ভারত একটি ম্যাচ জিতলেও পূর্ব আফ্রিকা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছিল খালি হাতে। অন্যদিকে, গ্রুপ ‘বি’ থেকে সেমিফাইনালে পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গী হয় অস্ট্রেলিয়া। আর গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান একটি জয় পেলেও, শ্রীলঙ্কা বিদায় নিয়েছিল কোনও ম্যাচ না জিতেই।

স্বাগতিকরা স্বপ্ন দেখছিল ফাইনালে খেলার। কিন্তু গ্যারি গিলমোর ঝড়ে লন্ডভন্ড হয় ইংলিশরা। ২৪ বছর বয়সী এই পেসার মাত্র ৩৯ রানে ৬ উইকেট তুলে নিলে প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৯৩ রানে অলআউট করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। আর চিরপ্রতিদ্বন্দীদের ৬ উইকেটে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে জায়গা করে নেয় অসিরা।

আরেক সেমিফাইনালও ছিল একপেশে। নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ১৫৮ রানে আটকে রাখে ক্যারিবীয় পেসাররা। জবাবে গর্ডন গ্রীনিজ ও কালিচরণের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে জায়গা করে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসের ফাইনালে দর্শকদের সাক্ষী হন ক্ল্যাসিক এক ম্যাচের। সেমিফাইনালের মতো ফাইনালেও, গ্যারি গিলমোরের দারুণ বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। ৮৫ বলে ১২ চার ও দুই ছয়ে তিনি খেলেন ১০২ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় ২৯১ রানের সংগ্রহ।

স্নায়ুচাপে ভোগা অসিদের পাঁচ ব্যাটসম্যান রান আউট হন। এতে ২৭৪ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। আর প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই আসরে ছিল না সিরিজ সেরার কোনও পুরস্কার। তবে ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল হন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই