• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চসিকে ভোটের মাঠে ৪৭ কিশোর গ্যাং


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৬, ২০২১, ০৩:৫৪ পিএম
চসিকে ভোটের মাঠে ৪৭ কিশোর গ্যাং

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে টার্গেট করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভাড়ায় খাটছে অন্তত ৪৭টি তালিকাভুক্ত সক্রিয় কিশোর গ্যাং। নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে হাল আমলের এই কিশোর গ্যাং কালচার। নির্বাচনী সভা ও মিছিলে মারামারিতে কাজে লাগানোর পাশাপাশি ভোটের দিনে আধিপত্য বিস্তারের জন্য এসব কিশোর গ্যাংকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগানোর শঙ্কাও রয়েছে প্রবলভাবে। 

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) করা তালিকা অনুযায়ী নগরীতে মোট ৪৭টি সক্রিয় গ্রুপের ৫৩৫ জন সদস্য রয়েছে। যাদের সব গ্রুপের কাছে আছে অবৈধ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র। তবে কিশোর গ্যাংয়ের সবচেয়ে বেশি আধিপত্য রয়েছে চকবাজার ও কোতোয়ালী থানা এলাকায়। যারা ইতিমধ্যেই ভাড়ায় কাজ করছে এসব এলাকার বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে।

মোটা টাকার বিনিময়ে নির্বাচনী মাঠে আধিপত্য ধরে রাখতে অনেক প্রার্থীই এসব গ্যাংকে ভাড়ায় খাটাচ্ছেন। আবার কোথাও কোথাও রাজনৈতিক হিসাবনিকাশের জেরে ভোটের মাঠে মারমুখী হয়ে অবস্থান নিচ্ছে তারা।

ধর্ষণ মামলার আসামি, খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্রব্যবসায়ীদের নিয়ে দলভারী করছেন প্রার্থীরা। 

নির্বাচনের কিশোর গ্যাংকে ভাড়ায় খাটানোর এই কালচারকে ভবিষ্যৎ সামাজিক প্রেক্ষাপটের জন্য বড় রকমের হুমকি বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মূলত কিশোর গ্যাংগুলো নিজেদের শক্তিশালী করছে। নিজেদের গ্রুপের জন্য কিনছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র, বাড়াচ্ছে সদস্য সংখ্যাও— যা পরবর্তীতে সমাজের জন্য ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘কিশোর গ্রুপ গুলোকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা শেল্টার দেয়— এখানে লুকোচুরির কিছু নেই। আর শেল্টার দেওয়ার পিছনের কারণ হচ্ছে মাদক ও অস্ত্র বিক্রি।’

চবির এ সাবেক উপাচার্য বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের উচিত, কিশোর বয়সী বাচ্চাদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার না করা। যদি কিশোরদের এই সাব-কালচার বন্ধ না করা যায়, তবে দেশের জন্য একটি অন্ধকারময় ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।’

ড. ইফতেখার আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে। এরকম যারা বিভিন্ন কিশোর গ্যাং কালচারের সাথে জড়িত, তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’

তবে এই বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছুই করার নেই মন্তব্য করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) শাহ মো. আবদুর রউফ বলেন, ‘কোনো প্রার্থীর যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তবে নির্বাচন কমিশনে জানাতে হবে। নির্বাচন কমিশন আমাদের আদেশ দিলে তারপর আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাই কমিশন যা বলবে আমরা তাই করবো। এর বাইরে কোন কাজ করার এখতিয়ার নেই আমাদের।’

সূত্র-চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!