নওগাঁ : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারান্দায় স্ট্রেচারে রাখা বাবার নিথর দেহ নিয়ে বসে আছে সাত বছরের শিশু কন্যা। বাড়ি থেকে আনা ব্যাগপত্র নিয়ে মেঝেতে বসা সে।
কাপড় চোপড়ের সঙ্গে বাবাকে বাতাস করার জন্য হাত পাখাটিও আনতে ভোলেনি। সেটিও আগলে রেখেছে। কিন্তু বাবা আর নেই! দু’চোখে ঝরছে পানি। মৃত্যুর সময় বাবার তীব্র শ্বাসকক্টের যন্ত্রণা নীরবেই দেখেছে ছোট্ট শিশুটি।
এমন করুণ দৃশ্য দেখে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে একটি জাতীয় অনলাইন পত্রিকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিকের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেন মৃতের পরিবারটির জন্য।
পত্রিকা পড়ে জানা যায়, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর পোরশা থানার চক বিষ্ণুপুর গ্রামের ফেরিওয়ালা মুজিবুর রহমান (৪০) সর্দিজ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসেছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির আগেই জরুরি বিভাগের সামনে মারা যান তিনি।
অসুস্থ বাবার সঙ্গে এসেছিল সাত বছরের শিশুকন্যা মরিয়মও। কিন্তু বাবাকে সুস্থ করে আর বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি শিশুটি।
সংবাদটি পড়ে সাংবাদিক সৈয়দ আতিক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ভ্যানে ফেরি করে বেড়াতেন মজিবুর রহমান। এতেই স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনো রকমে সংসার চলত। কিন্তু তার মৃত্যুর পর পরিবারটি অনিশ্চয়তায় মুখে। আয়-রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে নিয়ে বিপদে পড়েছেন মা তানজিলা বেগম। মানবতার ফেরিওয়ালা সৈয়দ আতিক তাৎক্ষনিক ২৫ হাজার টাকা মৃত মুজিবুর রহমানে স্ত্রী তানজিলার হাতে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সকালে খবরটি পড়েই আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। বেশি কষ্ট পেলে যেমন মানুষের হৃদয়ে ব্যথা অনুভূত হয়, তেমনি আমার হৃদয়ের মধ্যেও এক ধরনের ব্যথা অনুভব করি। সত্যি বলতে কী, আমার চোখে পানি চলে আসে। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, একটা ভালো কাজের মধ্য দিয়ে দিন শুরু করতে চাই। পরে রাজশাহী ব্যুরো প্রধান জিয়াউল গনি সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।’
সোনালীনিউজ/এসএন
আপনার মতামত লিখুন :