• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর আসল ‍খুনি


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৬, ২০২২, ০৫:৩৯ পিএম
জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর আসল ‍খুনি

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর আসল খুনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী ঘটনা এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের সময়ে প্রসিডিংস ও সাক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর খুনির বিষয়ে বিএনপির হারুনুর রশিদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বিএনপির হারুন তার বক্তব্যে দাবি করেন— বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অনুমাননির্ভর বক্তব্য দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারে তার নাম আসেনি। তিনি এর ধারে-কাছেও ছিলেন না।

হারুনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রস্তাবের ওপর বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও, আজকের সংসদে বিএনপির একজন সংসদ সদস্য কী বললেন, সেটা দেখলেন! বুঝলেন তাদের মানসিকতা। এরা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। এদের অন্তরে এখনও সেই পেয়ারের পাকিস্তান রয়ে গেছে। পাকিস্তানের গোলামিটাই তারা পছন্দ করে। বিএনপির হারুন সাহেবের বক্তব্যে এটা প্রকাশ হলো না!’

জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর খুনি বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খুনিকে কেন খুনি বলবে না। আমার কাছে ছবি আছে। ১৯৮৭ সালে খালেদা জিয়া এবং কর্নেল ফারুক কথা বলছেন, সেই ছবি আমার কাছে আছে। মাননীয় স্পিকার আপনার কাছে সেই ছবি পাঠিয়ে দিয়েছি। কর্নেল ফারুক আর রশিদের বিবিসির ইন্টারভিউতে আছে জিয়াউর রহমান তাদের সঙ্গে ছিল।’

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসঙ্গ টেনে সরকার প্রধান বলেন, ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহারের পর আমরা যখন মামলা করতে গেলাম, আমি বললাম—জিয়াউর রহমানের নামও থাকতে হবে। কারণ, সে-ই আসল খুনি। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছিল যেহেতু সে মৃত, তাকে আসামি করে কোনও লাভ হবে না। তাকে আসামি করা যাবে না। সেই সময়কার স্বরাষ্ট্র সচিব রেজাউল হায়াত এটা বলেছিলেন। সেই কারণে জিয়ার নামটি দেওয়া হয়নি। যেহেতু মৃত ব্যক্তির বিচার হয় না, তাই দিয়ে লাভ নেই। কিন্তু যখন প্রসিডিংস শুরু হয়, সাক্ষী হয়, তখন কিন্তু এটা স্পষ্ট জিয়াউর রহমান এই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তা না হলে খন্দকার মোশতাক তাকে সঙ্গে সঙ্গে সেনাপ্রধান করবে কেন? তাকে তো সেনাপ্রধান করেছে। কাজেই এগুলো রেকর্ড। কাজেই এটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই।’

‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদকে ধন্যবাদ দিতে জাতীয় সংসদে তোলা একটি সাধারণ প্রস্তাবের ওপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। বুধবার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের আনা এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ প্রস্তাব সংসদে পাস হয়।

জয় বাংলা জাতীয় স্লোগানের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশে আমরা মন্ত্রিসভায় জয় বাংলা জাতীয় স্লোগানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে সব জায়গায় এর নির্দেশনা পাঠানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজকের এই প্রস্তাব। এ জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশ এমন একটি পর্যায় চয়ে যায়, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পরিচয় দিতে সাহস পেতো না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আমাদের বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। ৭৫-এর পর এমন একটি বাংলাদেশ, মনে হতো এই বাংলাদেশ কি স্বাধীন বাংলাদেশ!’

জয় বাংলা স্লোগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ শেষ করেন জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে। এরপর থেকে এই স্লোগান হয় যায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন এই জয় বাংলার স্লোগানে। এই স্লোগানে ছিল আলাদা একটি উদ্দীপনা। আমরাও হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় এই স্লোগান দিতাম। আমরা ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হলেও কিন্তু মুক্তি পাইনি। মুক্তি পাই ১৭ ডিসেম্বর। ওই বন্দি থাকতেও আমরা স্লোগান দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর পরে এই স্লোগান সম্পূর্ণ বন্ধ, নিষিদ্ধ। ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের কত নেতাকর্মী এই স্লোগান দিতে গিয়ে জীবন দিয়েছে। এই স্লোগান দিলে নানা ধরনের কথা বলতো। অপপ্রচার করতো, ঠিক পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে যে ব্যঙ্গ করতো। ৭৫-এর পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সেই কাজটি করেছে। স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। জয় বাংলা স্লোগান ধ্বংস করেছিল। জাতির পিতার অবদানকে অস্বীকার করেছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল। আজকে বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে।’

এর আগে বিএনপির হারুন তার বক্তব্যে প্রস্তাব উত্থাপনকারী শাজাহান খান প্রস্তাবের বাইরে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য রেখেছেন দাবি করে, তিনি নোটিশের বাইরে যেসব আপত্তিকর বক্তব্য রেখেছেন, তা এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান।

জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে শাজাহান খানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী হিসেবে সেটা বলা হয়েছে, তা অনুমাননির্ভর। শেখ মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। রায় হয়েছে দণ্ড কার্যকর হয়েছে। এখানে তো জিয়াউর রহমানের নাম ধারে-কাছেও ছিল না। এখানে অনুমাননির্ভর বক্তব্য দিয়ে আলোচনাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।’

 


সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!