• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাটের সবার নজর সম্রাটের দিকে


ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জুলাই ৬, ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম
হাটের সবার নজর সম্রাটের দিকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সকাল থেকেই একে একে পশুর হাটে আসছে বস, সুলতান, সম্রাট,লক্ষী, বাদশা, বাহাদুর, রাজাবাবু, কালো মানিক, টাইগার, রাজা,ভাগ্যরাজসহ বাহারি নামের গরু। ওইসবগুলোকে পশুর হাটে ছামিয়ানার মধ্যে রাখা হয়েছে। পশুর হাটে আসা লোকজনদের মাঝে বেশ নজর কাড়ছে গরুগুলো। তবে সব গরুকে ছাপিয়ে আলোচনার শীর্ষে ছিল সম্রাট। যার ওজন ৩২ মণ। এর মধ্যে কেউ কেউ ছবিও তুলছেন। এমন দৃশ্য দেখা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের কলেজ পাড়া শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ মাঠে অস্থায়ী পশুর হাটে। মঙ্গলবার ছিল সাপ্তাহিক পশুর হাট।

সাপ্তাহিক এই পশুর হাটে দেশি বিদেশি লাল, কালো, সাদা রঙের গরুতে হাট জমজমাট হয়ে ওঠে। পশুর তুলনায় ক্রেতার সংখ্যাও রয়েছে বেশ ভালো। সময় যতই যাচ্ছে ততই সমাগম বাড়ছে। সকাল ১০টা থেকেই এই হাটে শুরু হয়েছে কেনা বেচা। তবে বাজারে নজর কেড়েছে ওই সব বড় আকৃতির গরুর। তবে বস, সুলতান, কালো মানিক, টাইগার, রাজা, ভাগ্যরাজসহ অন্যান্য গরুর আলোচনা কমতি নেই।

বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা কসবা টিঘরিয়া গ্রামের মো. শাকিল আহমেদ মালু মিয়া বলেন, শখের বসে তিনি ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটিকে লালন পালন করেন। গরুটি প্রায় ৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা ৬ ফুট রয়েছে। গরুটির বয়স সাড়ে ৩ বছর। ওজন রয়েছে ৩২ মণ। কালো সাদা শরীর। আদর করে ষাঁড়টির নাম রেখেছেন সম্রাট। তার আকৃতি বিশাল হলেও সে খুবই শান্ত স্বভাবের। কোরবানির হাটে এই সম্রাটের দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। তবে পশুর হাটে এই ষাঁড়টি সাড়া ফেললেও আশানুরূপ ক্রেতা মিলছে না। দাম ১২ লাখ টাকা চাওয়া হলেও সাড়ে ৬ লাখ টাকা দাম উঠেছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, তিন বছর আগে তিনি ফ্রিজিয়ান জাতের একটি বাছুর ক্রয় করেন। তখন বয়স ছিল এক বছর। এরপর তার খামারে নিয়ে এসে লালন-পালন করেন। বর্তমানে গরুটির ওজন ৩২ মণ।

তিনি আরো বলেন, গরুটিকে নিয়মিত ভুসি, চিটা গুড়, খৈল, ছোলা, খুদ ভাত, ঘাস ইত্যাদি খাবার খাইয়ে তাকে বড় করে তোলা হয়েছে। তবে মোটাতাজাকরণের জন্য কোনো ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। পাশপাশি নিয়মিত গোসল করানো, পরিস্কার ঘরে রাখা, তাপমাত্রা পরিমাপ রাখা ও রুটিন অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়াসহ প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়।

শাকিল আহমেদ বলেন, সম্রাটের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ হচ্ছে। এখন প্রতিদিন খাবারের পেছনে খরচ হয় ৬ থেকে ৭০০ টাকা খরচ হয়। খাওয়ানো, গোসল করানো, চিকিৎসাসহ সবকিছুতে খেয়াল রাখতে হয়। সম্রাটের মতো বড় আকারের গরু লালন-পালন খুবই ব্যয়বহুল ও কষ্টের। খাবার ও বাসস্থান ভিন্ন হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের মতোই অতি যত্ন করেই গরুটি পালন করা হয়েছে। গরুটিকে দেখভাল করার জন্য আলাদা করে মানুষ রাখতে হয়েছে।

পশুর হাটে দেখতে আসা মো. মোবারক হোসেন বলেন, এই বাজারে অনেক বড় সাইজের গরু উঠেছে। কিন্তু এতো বড় গরু আমি আর কখনো দেখিনি। যেমন বড় তেমনি উঁচু এবং লম্বা। কালো সাদা শরীর। দেখতে খুবই ভালো লেগেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার বলেন, এ উপজেলার কৃষক ও খামারিরা দেশীয় পদ্ধতিতে যত্ন নিয়ে গরু লালন পালন করছে। পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা খামারগুলোতে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। খামারিদেরকে ক্ষতিকারক ওষুধ না খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ যদি গোপনে এই অসাধু প্রক্রিয়া করে থাকে তাহলে অবশ্যই পশুখাদ্য আইনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!