• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সৌরশক্তি ব্যবহার করে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৯, ২০২৩, ১১:০৩ এএম
সৌরশক্তি ব্যবহার করে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় সৌরশক্তি ব্যবহার করে চর অঞ্চলে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মুজিব নগর সেচ উন্নয়ন প্রকল্প কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এই তিন জেলায় নদীর পানি ব্যবহার করে সেচ প্রকল্প চলমান রাখা হয়েছে। এতে করে কৃষকরা স্বল্প খরচে অধিক ফসল ফলাতে সক্ষম হচ্ছে।

সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে জানা যায়, কৃষিবান্ধব সরকার কৃষির উন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পানি সংরক্ষণ, সেচের অপচয় রোধ, ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারের লক্ষ্যে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ তেমনি একটি উদ্যোগ। এ ধরনের কর্মসূচীর মাধ্যমে সরকার কৃষকদের সৌরশক্তির ব্যবহারের উপর আগ্রহ তৈরি করছে। এর ফলে কৃষিতে উৎপাদন খরচ অনেক কমে আসবে।

কুষ্টিয়ায় সৌরশক্তি ব্যবহার করে কৃষি জমিতে চলছে সেচের কাজ। সকালে উদিত সূর্যরশ্মি সৌর প্লান্টের উপর পরার সাথে সাথেই অত্যাধুনিক সৌর চালিত মোটরটি চালু হয়ে যায়। আবার বিকেলে সূর্যাস্ত গেলে আপনা আপনিই মোটর বন্ধ হয়ে যায়।
পৃথিবীতে ভবিষ্যতে জ্বালানি শক্তির যোগান দিতে ও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিং প্রতিরোধে সকল দেশ নবায়নযোগ্য গ্রীন এনার্জির দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তারমধ্যে সৌরবিদ্যুৎ বেশি ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের চর অঞ্চলের কয়েকটি এলাকার কৃষকরা এখন সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিজমিতে নামমাত্র মূল্যে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। এতে করে চর অঞ্চলের কৃষকরা কৃষিতে নতুন অবদান রেখেছেন। কুষ্টিয়ার ৪ টি এলাকার কয়েকশত কৃষক এ সুবিধা পাচ্ছেন।

কুমারখালী দয়ারামপুর এলাকার কৃষক মোঃ আবু নাছের বলেন, তাদের এলাকার কৃষিকাজে কৃষকদের সেচ নির্ভরতা ছিলো ডিজেল চালিত মেশিনের উপর। এতে তার এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে দেড় হাজার টাকা লাগতো। সোলার পাম্প স্থাপন করায় এখন আর সে খরচটা লাগছে না। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন খরচ কমেছে। বিনামূল্যের এ সেচে লাভবান হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা সোলার সেচে প্রতিনিয়ত আগ্রহী হচ্ছেন।

কৃষক লিটন শেখ বলেন, এসব স্থাপনকৃত সোলার পাম্পের উৎপাদিত শক্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যাটারির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে শুধু দিনের বেলায় সেচ দিতে হয়। এছাড়াও শীতকাল ও আবহাওয়া খারাপ থাকলে সেচ দেয়া যায় না। তবে ব্যাটারিতে চার্জ সংরক্ষরণের ব্যবস্থা করা হলে দিনের সাথে রাতের বেলায়ও সেচ দেয়া যেত। এতে সেচ সুবিধার মধ্যে আসতো আরো বেশি সংখ্যক কৃষক।

জালানি তেল ও বিদ্যুৎ এর দাম বৃদ্ধির ফলে উৎপাদনমুখী নিত্যপণ্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব পরেছে কৃষিখাতেও। কৃষিতে সকল ফসল উৎপাদনে অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে পানি। তেল ও বিদুৎ এর দাম বৃদ্ধিতে কৃষিতেও পরেছে ব্যাপক প্রভাব পরেছে, বেড়েছে উৎপাদন খরচ।

মোঃ মাহবুব আলম, প্রকল্প পরিচালক, বিএডিসি (ক্ষুদ্রসেচ) কুষ্টিয়া বলেন, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এই তিন জেলায় নদীর পানি ব্যবহার করে সেচ প্রকল্প চলমান রয়েছে। সৌরশক্তি ব্যবহার করে কৃষি জমিতে উৎপাদন খরচ কমাতে ও কৃষকদের নিরবচ্ছিন্ন সেচের ভোগান্তি ও ভূগর্ভস্থ পানিরও অপচয় রোধ করে ভূগর্ভের উপরের পানি ব্যবহার করায় এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। তাই চরাঞ্চলে ইরি ও বোরো মৌসুম ছাড়াও বছরজুড়ে নানা ধরনের মৌসুমি সবজির চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ সোলার সেচ পাম্প।

সোনালীনিউজ/আরআই/এসআই

Wordbridge School
Link copied!