• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাড়িচালকের মরদেহ বস্তায় ভরে ঘুরছিলেন স্বামী-স্ত্রী


পাবনা প্রতিনিধি মার্চ ২৭, ২০২৩, ১০:৪৬ এএম
গাড়িচালকের মরদেহ বস্তায় ভরে ঘুরছিলেন স্বামী-স্ত্রী

পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের নিকিমত কোম্পানীর পরিচালকের গাড়িচালক সম্রাট হোসেনকে (২৯) হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার সীমা খাতুন (২৫) পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্রাটের বন্ধুর স্ত্রী সীমা খাতুনকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সীমা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সম্রাট গাড়ি নিয়ে আমার বাসায় আসে। তার মাথা ধরেছে বলে বিছানায় শুয়ে পড়ে। আমার স্বামী মোমিন ওষুধ আনতে গেলে সম্রাট আমার শরীরে হাত দেয়। আমি রাগে হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় ও গোপানাঙ্গে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্বামী বাসায় ফিরলে আহত অবস্থায় বস্তায় ভরে ওই গাড়িতে তুলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করার পর আমাকে নামিয়ে দিয়ে শিলাইদহ ঘাটে গাড়ি রেখে সটকে পড়ে।’

সুমী খাতুন নিহত সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিনের স্ত্রী। তার বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার বাঁশেরবাদা গ্রামে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন আব্দুল মমিন। নিহত সম্রাটের বাড়ি একই উপজেলা মধ্য অরনকোলা আলহাজ ক্যাম্প এলাকায়।

এর আগে শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে ঈশ্বরদী থানায় নিহতের বাবা আবু বক্কার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিন ও তার স্ত্রী সীমা খাতুনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সম্রাট গাড়ি নিয়ে বন্ধু আব্দুল মোমিনের বাড়িতে যায়। তার মাথা ব্যথা করছে জানিয়ে মোমিনের বিছানায় শুয়ে পড়েন। আর বন্ধু আব্দুল মোমিনকে স্থানীয় ফার্মেসির দোকানে ওষুধ আনতে পাঠান। মোমিন দোকানে গেলে মোমিনের স্ত্রী সীমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সম্রাট।

এ সময় সীমা ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে গুরুতর আহত করে। মোমিন ওষুধ নিয়ে বাসায় ফিরে অবস্থা বেগতিক দেখে ও স্ত্রীর নিকট থেকে সব শুনে আহত সম্রাটকে বস্তায় ভরে গাড়িতে তুলে চলে যান। এই সময় সম্রাট মৃত্যু যন্ত্রণায় বস্তার ভেতর থেকে গোংরাতে থাকে। তখন তারা গাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হলে সীমাকে পাবনা সদরের মাধপুর এলাকায় নামিয়ে দিয়ে বস্তাভর্তি লাশ নিয়ে গাড়িসহ মোমিন চলে যান। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, গ্রেপ্তার সীমা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রোববার (২৬ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হলে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই দিনের রিমান্ড শেষ হলে তাকে কারাগারে পাঠাতে বলা হয়েছে।

নিহত সম্রাটের বাবা আবু বক্কর বলেন, আমার ছেলে সম্রাট তার বন্ধু মোমিন ও মোমিনের স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছিল। তবে তাদের চাকরি চলে যায়। আবারও তাদের শ্রমিক হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেয়। কৌশলে আমার ছেলেকে স্বামী-স্ত্রী ডেকে নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে।

সোনালীনিউজ/এসএইচ/এসআই

Wordbridge School
Link copied!