• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

শিশুকে ডোবায় ফেলে শিক্ষক বললেন, ‘আমার কাছে মানুষের চেয়ে বালির মূল্য বেশি’


কুমিল্লা প্রতিনিধি  জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
শিশুকে ডোবায় ফেলে শিক্ষক বললেন, ‘আমার কাছে মানুষের চেয়ে বালির মূল্য বেশি’

কুমিল্লা: বুড়িচংয়ে সামান্য বালুর জন্য চার বছরের এক শিশুকে ডোবাতে ফেলে দিয়েছে হাজী শাহাজাহান নামের এক শিক্ষক। মুহূর্তে শিশুর প্রতি অমানবিক নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে শুরু হয় সমালোচনা।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত বুড়িচং পূর্ব পাড়া মঞ্জুর আলী সর্বার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই শিশুটির মা যখন ওই ব্যক্তিকে বলছিলেন, আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নেই আপনি আমার বাচ্চাকে পানিতে ফেলে দিলেন। আপনি একজন সামাজিক মানুষ হয়ে এমন কাজ কিভাবে করতে পারলেন। একটু বালু ফেলে দিয়েছে বলে আপনি এভাবে আমার বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দিবেন। আপনি কি একটা যুক্তিসঙ্গত কাজ করলেন এটা।

আপনি আমার বাচ্চাকে ফেলে দেওয়ার পর না উঠিয়ে উল্টো বলছেন যে বাচ্চাটা মরে যাক। তখন বাচ্চাকে ফেলে দেওয়া ওই ব্যক্তি পাল্টা জবাবে বলেন, তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা এটা আমি দেখবো না। আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই৷ আর আমি সামাজিক মানুষ ও না৷ আজকে ২০ দিন ধরে সবাইকে বলতেছিলাম। কেউ আমার কথা শুনেনি। তোমার বাচ্চা এখানে এসে বালি ধরেছিলো৷ তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন।

নির্যাতিত শিশুর শামছুন নাহার তানিয়া বলেন, আমার সন্তানকে মাষ্টার শাহাজাহান হত্যা করার চেষ্টা করেছে, আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। একজন শিক্ষক হয়ে ঘৃণিত কাজ কিভাবে করে সে। সেদিন যদি আমার মেয়ে উপস্থিত না থাকতো তাহলে আমার বাচ্চাকে হত্যা করা হতো।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে বুড়িচং থানার পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে মোসা. মিফতাহুল মাওয়া (০৪) এবং মোসা. গালিবা সুলতানা (১০) বালি নিয়ে খেলা করছিলেন ওই এলাকার মো. শাহ জাহান (৫০) এর বাড়ির সামনে। 

এসময় একই এলাকার বাসিন্দা ও তাদের প্রতিবেশী মো. শাহ জাহান (৫০) পূর্ব শত্রুতার জেরে নজির আহমেদের ছোট মেয়ে মিফতাহুল মাওয়াকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং কোলে তুলে পুকুরে ফেলে দেয়। এসময় গালিবা চিৎকার করলে শাহ জাহান তাকেও মারধর করে। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত শাহজাহান পালিয়ে যায়। 

পরে স্বজনরা আহত দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মিফতাহুল মাওয়ার অবস্থার অবনতি দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন।

এ বিষয় নিশ্চিত করে বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, শুক্রবার সকালে শিশুর মা বাদী হয়ে বুড়িচং থানা একটি শিশু নির্যাতন মামলা করেন। আমরা আসামিকে ধরার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেছি। 

কুমিল্লা পুলিশ সুপার নজির আহমেদ বলেন, ভিডিও টা দেখছি, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!