• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বৈরী আবহাওয়া কুয়াকাটা ছাড়ছেন পর্যটকরা 


কলাপাড়া প্রতিনিধ  মে ২৯, ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
বৈরী আবহাওয়া কুয়াকাটা ছাড়ছেন পর্যটকরা 

কুয়াকাটা: গভীর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে বড় বড় ঢেউ ভেঙে পড়ছে উপকূলে ভাসিয়ে নিয়েছে কুয়াকাটার ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নেই পর্যটক। 

উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে গত তিন দিন ধরে পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সমুদ্র সৈকতে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা।

বৃষ্টি কারণে অনেক পর্যটক গন্তব্যে ফিরে গেছেন। পর্যটকরা চলে যাওয়ায় অনেকটা খালি পড়ে আছে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো। বেচাকেনা নেই খাওয়ার হোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দোকানগুলোতে। তারা বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অনেকে দোকান বন্ধ রেখে বাড়ি চলে গেছেন। অতি বৃষ্টির কারণে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। 

কুয়াকাটা খাবার হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি বলছেন,  বৈরি আবহাওয়াকে কেন্দ্র করে পর্যটক কমে গিয়েছে একে খুব লোকসান হচ্ছে আমাদের। 

জানা যায়, বর্তমানে ৯০ ভাগ রুমই খালি। কাঁকড়া ও ফিস ফ্রাই, শুটকির দোকান, পোশাকের দোকান, ছবি প্রিন্ট ও এডিটিং স্টুডিও, বার্মিজ আচার, চকলেটের দোকান ও ঝিনুকের দোকান গুলোতে ভীড় নেই পর্যটকদের। বেচাকেনা একেবারে শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে। তাই অনেকেই দোকন বন্ধ করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

আচার ব্যবসায়ী মহিবুল্লাহ বলেন, আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে আমাদের দোকানগুলোতে তেমন কোনো বেচাকেনা নেই। বসে বসে সময় পার করছি। বর্তমানে পর্যটক না থাকার কারণে বেচাকেনা একেবারেই খারাপ যাচ্ছে।

কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটক তুহিন বলেন, কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে। গত দু'দিন হোটেল থেকে বের হতে পারছি না। সি-বিচে নেই কোনো পর্যটক। খাওয়ার হোটেলগুলো প্রায় বন্ধ। কয়েকটা হোটেল খোলা রয়েছে। তাতে তাজা খাবার নেই। সৈকতে নেমে গোসল করেও আনন্দ পাইনি। বলতে গেলে হাতে গোনা কয়েক জন গোসলে নেমেছে। এক কথায় বলা যায়-পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা। নেই কোনো মানুষের কোলাহল। বৃষ্টিতে ভিজে সাগরে নেমেছি। একা নামতে ভয় হচ্ছে।

পরিবহন ব্যবসায়ী মিরাজ বলেন, গত ৩ থেকে ৪ দিন ধরে গাড়ি প্রায়ই ফাঁকা যাচ্ছে। আবার অনেক ট্রিপ বাদ হচ্ছে যাত্রীর অভাবে। কাউন্টারে বসে বসে সময় কাটাচ্ছি।

হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় পর্যটকরা শূন্য রয়েছে কুয়াকাটা। ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যটক থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এলাকা ছাড়ছেন তারাও। গত মঙ্গলবার থেকে হোটেলে বুকিং নেই। তাই পর্যটন কেন্দ্রটি এখন পর্যটকশূন্য। তবে সামনে ঈদুল আযহা উপলক্ষে টানা ছুটি রয়েছে সেই ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় একেবারেই পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা। হোটেল গুলোতে ৫ শতাংশ পর্যটক রয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা লোকসানে রয়েছেন।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা, সামান্য কিছু পর্যটক রয়েছে তাদের সেবায় আমাদের টিম সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে। সমুদ্রে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি রয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্র কিছুটা উত্তাল রয়েছে।  আমরা পর্যটকদের মাইকিং করে সতর্ক করছি তারা যাতে গভীর সমুদ্রে বিচরণ না করে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!