• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড


বরগুনা প্রতিনিধি জুলাই ২২, ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ঢাকা: যৌতূক দিতে না পারায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন। 

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
  
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের জাকিরতবক গ্রামের ছামেদ মীরার ছেলে মো. ছলেমান (৪১)। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন। 
 
জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরমাইঠা গ্রামের মৃত সিরাজুল হকের স্ত্রী পিয়ারা বেগম বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে বরগুনা থানায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ছলেমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। 

মামলার ভিকটিম লাকির সঙ্গে ২০০৭ সালে আসামি ছলেমান বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই ছলেমান এক লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে লাকিকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকে বিষয়টি ভিকটিম লাকি তার মাকে জানায়।


 
২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি লাকি ও তার স্বামী ছলেমান শ্বশুর বাড়িতে আসে। ১৮ জানুয়ারির সকালেও ছলেমান পুনরায় লাকির কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক দিতে অপারগতা জানালে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ছলেমান লাকিকে চড়-থাপ্পড় দেয়। 

এরপর সারাদিন তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলেনি। ঐদিন সন্ধ্যা অনুমানিক ৬টার দিকে ছলেমান তার স্ত্রী লাকিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ীর ঘর থেকে বাইরে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ছলেমান একা ঘরে ফিরে আসে। তখন লাকীর মা পিয়ারা বেগম তার মেয়ের খোঁজ করলে ছলেমান কিছুই বলেনি।
 
পরে লাকির মা প্রতিবেশী ফজলুর রহমানকে নিয়ে খোঁজে বের হন। রাত পৌনে ৭টার দিকে প্রতিবেশী খলিলের বাড়ির দক্ষিণ পাশে খড়কুটোর মধ্যে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাকির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
 
রায়ের পর বাদী পিয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী নেই। আমি এবং আমার মেয়ে লাকি ছলেমানকে যৌতুক দিতে না পারায়, সে ঠান্ডা মাথায় আমার মেয়েকে তার পড়নের কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেছে। আমি লোকজন ডেকে ছলেমানকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিই। সে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল, পরে জামিনে গিয়ে পলাতক হয়। এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে আরও বেশি খুশি হবো যেদিন শুনবো, ছলেমানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
 
পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রনজুয়ারা শিপু বলেন, ছলেমান ঠান্ডা মাথায় লাকিকে হত্যা করেছে। এটি একটি যুগান্তকারী রায়। এই বার্তাটি যদি সমাজে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে যৌতুকের জন্য নারীদের ওপর নির্যাতন কমে আসবে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!