ছবি: সংগৃহীত
পাবনা: পারমাণবিক ফিজিক্যাল স্টার্টআপের (জ্বালানী লোডিং) দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে দেশের প্রথম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। জ্বালানী লোডিং প্রস্তুতির সামগ্রিক অবস্থা নিরীক্ষণের জন্য গত ৭ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বিস্তৃত পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়েরা), রাশিয়ার শিল্প ও কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তা তদারকি সংস্থা ভিও সেফটি এবং অন্যান্য রাশিয়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল। বায়েরা'র চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান বুধবার (২৬ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল)-এর মানবসম্পদ, ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, প্রকল্পের সিস্টেম ও ফ্যাসিলিটি এবং পরিচালন সংক্রান্ত ডকুমেন্ট পরিদর্শন করা হয়েছে।
প্রতিনিধি দলটি কমিশনিং কার্যক্রমের অগ্রগতি, বিভিন্ন স্থাপনা, স্টার্টআপ ও সমন্বয় প্রটোকল এবং সনদসমূহ বিচার বিশ্লেষণ করেছে। ফিজিক্যাল স্টার্টআপ এবং জ্বালানী লোডিং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এ পর্যায়ে রিয়্যাক্টরে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক জ্বালানী লোড করা হয় এবং পাওয়ার স্টার্টআপ কার্যক্রম শুরু হয়, যার অধীনে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন সিস্টেম পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সীমিত মাত্রায় রিয়্যাক্টরে পারমাণবিক বিক্রিয়ার সূচনা করা হয়।
এনপিসিবিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান জানিয়েছেন, ‘এনপিসিবিএল ইতোমধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আইএইএ কর্তৃক পরিচালিত দুই সপ্তাহব্যাপী পরীক্ষামূলক প্রি-ওসার্ট মিশন, তিন সপ্তাহব্যাপী প্রি-ওসার্ট মিশন এবং সর্বশেষ দুই সপ্তাহব্যাপী বায়েরা, ভিও সেফটি ও রাশিয়ান রেগুলেটরি সংস্থা রস্টেকনাদজর কর্তৃক যৌথ পরিদর্শন। এছাড়াও এনপিসিবিএল ও রসএনার্গোটম নিয়মিতভাবে স্ব-মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সেফগার্ডকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বায়েরা রূপপুর প্রকল্পের ফিজিক্যাল স্টার্টআপ প্রস্তুতি যাচাই করেছে। বিশেষজ্ঞ দল সার্বিক অগ্রগতি ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে এবং কিছু সুপারিশ দিয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে বায়েরা ফিজিক্যাল স্টার্টআপ ও প্রথমবারের জ্বালানী লোডিংয়ের অনুমোদন ও লাইসেন্স প্রদান করবে।’
বায়েরা'র চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সেফগার্ড ফোকাস রেখে ফিজিক্যাল স্টার্টআপ রেডিনেস ইন্সপেকশন সম্পন্ন হয়েছে। রাশিয়ার রেগুলেটরি অথরিটি এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার সুপারিশ পেলে ফুয়েল লোডিংয়ের অনুমতি দেওয়া হবে।’
রূপপুর প্রকল্পের জ্বালানী লোডিংয়ের জন্য জেনারেল ডিজাইনার (Rosatom Engineering Division), রিয়্যাক্টর প্লান্ট ডিজাইনার (Gidro Press), রাশিয়ার ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টার ‘কুরচাতভ ইনস্টিটিউট’ এবং বায়েরা ছাড়াও ভিও সেফটির এসেসমেন্ট প্রতিবেদন প্রয়োজন।
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে। দুটি ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি থাকবে, প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট।
এসএইচ







































