• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিচারক


নিউজ ডেস্ক জুন ১৬, ২০২২, ০৪:০৪ পিএম
অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিচারক

সংগৃহীত ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: অন্যদিনের মতোই চাঁপাইনবাবগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলি আদালতে চলছিল নির্ধারিত কার্যক্রম। শুনানি ছিল একটি বিবাহ বিচ্ছেদ মামলার।

বুধবার (১৫ জুন) ধার্য থাকা শুনানিতে আট মাসের সন্তান কোলে আসেন এক নারী। আদালতে উপস্থিত ছিলেন ওই নারীর স্বামীও। মায়ের কোলে ফুটফুটে সন্তান দেখে আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক হুমায়ুন কবীর স্বপ্রণোদীত হয়ে বাদী-বিবাদীর সঙ্গে কথা বলতে চান।

বিচারক বিষয়টি উভয়পক্ষের আইনজীবীদের জানালে তারা মামলার বাদি-বিবাদীর অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে জ্যেষ্ঠ বিচারক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করেন। স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে আলাপের পর বিচারক তাদের আবার বিয়ের ব্যবস্থা করেন। পরে লাল শাড়ি পরে স্বামীর সঙ্গে আবার বিয়ে বসেন স্ত্রী। এসময় তাদের সঙ্গে ছিল তাদের সন্তানও।

আদালতের এ পর্যবেক্ষণ ও ঘটনার পূর্বাপর সম্পর্কে আইনজীবী আবদুল কালাম আজাদ জানান, জেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিয়ে বিচ্ছেদ মামলার বাদি-বিবাদী হলেন গোমস্তাপুর উপজেলার নাদিম আলী ও শিউলি বেগম। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়েছিল। এরপর নানা কারণে দুজনের মধ্যে তালাক হয়।

তালাক কার্যকর হওয়ার সময় শিউলি বেগম অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরে ২০২১ সালের শিউলি বাদি হয়ে স্বামী নাদিম আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় গত বছর ২৬ নভেম্বর তিনি সন্তান প্রসব করেন। তারপর থেকে প্রায় এক বছর ধরে মামলাটি চলে আসছিল।

বুধবার (১৫ জুন) মামলয় বাদি পক্ষের শুনানি ছিল। এতে ৮ মাসের সন্তানসহ অংশ নেন শিউলি।

আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে আমরা দুই আইনজীবী উভয় পক্ষকে বিচারকের খাস কামরায় নিয়ে যাই। সেখানে হুমায়ুন কবীর তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলে আবার বিয়ের ব্যবস্থা করেন। পরে তিনি নিজেই সাক্ষী হয়ে নাদিম ও শিউলির বিয়ে দেন। এ সময় শিউলিকে একটি লাল শাড়ি পরতে দেওয়া হয়।

স্বামী-স্ত্রীর নতুন বিয়ের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও প্রকাশ করেন জ্যেষ্ঠ বিচারক হুমায়ুন কবীর। দম্পতির সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন- সাত মাসের সন্তান পেটে নিয়ে মেয়েটি ডিভোর্সের শিকার হয়। যৌতুকের মামলা করে এবং আট মাসের বাচ্চা কোলে নিয়ে ছয়জন সাক্ষীসহ আজ আমার আদালতে হাজির হয়। আমার অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপে লাল শাড়ি পরিয়ে বধূ সাজিয়ে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে এই নিষ্পাপ সন্তানকে ফিরিয়ে দিলাম তার হারানো পিতৃস্নেহ।

পরে বিষয়টি জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে জ্যেষ্ঠ বিচারক হুমায়ুন কবীর ক্ষুদে বার্তায় সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!