• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাক-বাজেটে ৩১ প্রস্তাবনা বিসিআই’র


নিজস্ব প্রতিবেদক  মার্চ ৫, ২০২১, ১১:০৯ এএম
প্রাক-বাজেটে ৩১ প্রস্তাবনা বিসিআই’র

ঢাকা : ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করাসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে ৩১টি প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অবইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দেশের শিল্পখাতের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠণটি।

বিসিআই তাদের আয় কর প্রস্তাবনায় বলেছে, করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করে ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয় করের হার পুণঃনির্ধারণ করা দরকার। মূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী ২০২১-২০২২ কর বৎসরের জন্য বর্তমান ব্যাক্তিগত করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয় করের হার পুনঃনির্ধারনের প্রস্তাবনা দিয়ে সংগঠণটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের ব্যক্তিগত কর ৫ লাখ রুপি উল্লেখ্য করে। 

বিসিআই দেয়া প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়েছে, মুজিবশত বর্ষ ২০২১-২০২২ এর অন্যতম লক্ষ্য অনুযায়ী সকল তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে এবং স্বাবলম্বী তরুণ সমাজ গঠন করতে‘তরুণ উদ্যোক্তা নীতি, একটি দক্ষ ও কর্মঠযুবসমাজ তৈরি করতে প্রতি উপজেলায় যুবপ্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে স্বল্প ও অদক্ষ তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করার স্বার্থে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে বিসিআই মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্পখাতে তরুণ শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে 

দেশের শিল্পখাত প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনটি তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পায়নের প্রসার, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা এবং বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি দারিদ্র বিমোচন এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষমাত্রা, সরকারের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, ২০২৬ সনে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়া ইত্যাদি কার্যক্রম সফল বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য সামনে রেখে আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ২০২১-২০২২ এ বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশ পেশ করছে।

সুপারিশগুলো হলো-

-কারিগরী এবং ভোকেশনার কোর্সকে উৎসাহিতকরার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং আয় কর অবকাশ প্রদান করা।
- দক্ষ, প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্নদের ক্ষেত্রে যদি  Institution এমনকি Industry-তে নিয়োগ দেওয়া হয় তাদের মজুরী কর মুক্ত রাখা।

-মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং তরুণ শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য নূন্যতম ৫ বছর কর অবকাশ প্রদান করা পরবর্তিতে বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা;

-কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শতকরা ৫% শারিরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিকনিয়োগ করলে বিশেষ কর সুবিধা;
-বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবারপ্রায় ৬৪% সেবা বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত হতে পাওয়া যায়। এই বেসরকারিখাতকেআধুনিক ও যুগোপযোগী করার জন্য পৃথক অর্থনৈতিক বাজেট প্রনয়নের জন্য সুপারিশ করছি;

-গবেষণা ও স্কিল ডেভল্পমেন্টেরজন্য সব ধরনের বিনিয়োগ করমুক্ত রাখা;

-ক্ষুদ্র শিল্পএবংনারী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে খাতভিত্তিক যৌথ প্রতিষ্ঠানগুলিকে Export Oriented এর ক্ষেত্রে বন্ডেড-ওয়্যার হাউজ সুবিধা প্রদান করা; 

-চট্রগ্রাম বন্দরে কার্যপরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় একজন কমিশনার কর্তৃক সার্বিক কার্যক্রম সমাপ্ত করনে বিলম্ব হওয়ায় পণ্য খালাসে বিলম্ব হয় ফলে ব্যবসায়িক খরচাদি বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় দায়িত্বভেদে কশিনারের সংখ্যা বৃদ্ধির সুপারিশ করছি।

-Eco-friendly environment -এরজন্য Tax rebate দেওয়ার সুপারিশকরছি।
-শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ০% উৎস কর প্রস্তাবকরছি।

-নতুন উদ্যোক্ত তাদের ক্ষেত্রে ৫ বছর কর অবকাশের প্রস্তাবকরছি।

-নতুন উদ্যোক্ততা ও CMS কে দেশব্যাপী প্রসার এবং প্রচার শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে Corporate Tax ১০% থেকে ১৫% রাখার সুপারিশ করছি। 

-সব ধরনের utility- র উপর ভ্যাট অব্যাহতির সুপারিশ করছি।

-নতুন উদ্যোগতা এবং CMS সৃষ্টিতে ২ কোটিটাকাপর্যন্তমূলধনেরউৎস খোজারপ্রয়োজননাই।

-প্রতিটিও Industry-র ক্ষেত্রে TIN No এবং যে কোন Association অথবা Chamber অথবা SME Foundation BSICএর নিবন্ধনজুরুরী।

-CMS ক্ষেত্রে প্রথম ৩ বছর কর অবকাশের প্রস্তাব করছি। পরবর্তীতে ১০-১৫% হারে কর ধার্য্য করা যেতে পারে।
-Dividend উপর কর অবকাশকরা হোক।

খরমযঃ ঊহমরহববৎরহম

-Light Engineering industry -এর ক্ষেত্রে machineries প্রস্তুত করে বিক্রয় করলে ভ্যাট অবকাশ সুপারিশ করছি।

-আমদানিকৃত Aluminum thick sheet duty অব্যাহতির সুপারিশ করছি।
-আমদানিকৃত কাঁচামালেভ্যাটঅবকাশেরসুপারিশকরছি।

-রপ্তানির ক্ষেত্রে TT –এর মাধ্যমে Payment আসলে তার উপর নগদ প্রণোদনা দেওয়ার বিধান রাখার সুপারিশ করছি।

বাংলাদেশ চেম্বার অবইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)

শুল্ক বাজেট সম্পর্কিত সাধারন প্রস্তাবনা: করোনাভাইরাস মহামারীর অর্থনৈতিক প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করে জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ভিশন ২০২১ ও ২০৪১, টেকসই-উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জনসহ স্বল্পোন্নত দেশ হতে ২০২৬ সনে উন্নয়ন শীল দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়া ইত্যাদি কার্যক্রম সফল বাস্তবায়ন করার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাভুক্ত দেশগুলিরন্যায়, জাতীয় স্বার্থেই, বাংলাদেশে শুল্ক ও কর কাঠামো সংস্কার করে একটি বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন বান্ধব স্থায়ী কর ও শুল্ক ব্যাবস্থা প্রবর্তন করা অপরিহার্য ।  

-সকল মূসক নিবন্ধিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মূসক ফরমে ঘোষিত সমূদয় মূলধনি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের উপর আরোপিত ১% এর অতিরিক্ত সকল প্রকার শুল্ক-করাদি মওকুফ করার অনুরোধ করছি।

-আমদানি শুল্ক পর্যায়ে সকল তৈরী পণ্যে  AIT, SD & RD বলবৎ আছে তা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা যাচ্ছে। যে সকল পণ্যে আরডি আরোপ করা হয়নি সে সকল পণ্যে কমপক্ষে ১০% হারে আরডি আরোপ করার প্রস্তাব করা যাচ্ছে। সম্পূরক শুল্ক হার হ্রাস করে বিদ্যমান শিল্প প্রতিরক্ষ ণহার কমানো সমীচীন হবে না। তবে বিকল্প হিসেবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক সমন্বয় করতে হলে সমহারে আরডি আরোপের প্রস্তাব করা যাচ্ছে।

-আন্ডারইন ভয়েস এবং মিস ডিক্লারেশন- এর মাধ্যমে পণ্য আমদানি বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নিয়মিতভাবে মূল্যের খাত ভিত্তিক সঠিক ডাটা আহরণ এবং সে ভিত্তিতে Tax Impose করা এবং সকল বন্দরে স্ক্যানার ও স্বয়ংক্রিয়পরিমাপযন্ত্র স্থাপনেরপ্রস্তাবকরছি।

মূসক সংক্রান্ত সুপারিশ : ভোক্তা ও দেশের ৮৫% ক্ষুদ্র ও মাঝারিখাতের স্বার্থ ও সামর্থ্য অনুযায়ীসকলপণ্য এবং সেবাখাতেরজন্য প্রযাজ্য ভোক্তাবান্ধব, ব্যবসা বান্ধব এবং রাজস্ব বান্ধব সুনির্দিষ্ট স্তর ভিক্তিক নিম্নোক্ত মূসকহারের মৌলিক বিধান মূল মূসক আইনের মাধ্যমে বলবৎ করা জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য:

-শিল্পখাতের বার্ষিক টার্নওভারের ঊর্ধ্বসীমা বর্তমানে ৩ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০ কোটি টাকায় উন্নীত করে শিল্পখাতে টার্ন-ওভার কর ৪% থেকে ৩% নির্ধারণ করা;

-টার্নওভার করের সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অর্থবছরের আয় কর নির্ধারণ কালে অনুমোদিত টার্নওভারের ভিত্তিতে দাখিলপত্রে প্রদর্শিত টার্নওভারের পরিমাণ হিসাবে গণ্য করা;

-উপকরণ কর রেয়াত গ্রহণে অসমর্থ ব্যক্তির কর যোগ্য পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন ৩০% হিসাবে গণনা করে তার উপর ১৫% অর্থ্যাৎ সরবরাহ মূল্যের উপর ৪.৫% হারে মূসক আরোপ করা;

-উপকরণ কর রেয়াত গ্রহণে অসমর্থ ব্যক্তির কর যোগ্য সেবার ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন ৪০% হিসাবে গণনা করে তার উপর ১৫% অর্থ্যাৎ সরবরাহ মূল্যের উপর ৬% হারে মূসক আরোপ করা।

আয়কর : করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করছি (ভারতে ৫ লক্ষরুপি)। ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুণঃনির্ধারণ: মূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী ২০২১-২০২২ কর বৎসরের জন্য বর্তমান ব্যাক্তিগত করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয় করের হার পুনঃনির্ধারনের প্রস্তাব।

-শিল্প ক্ষেত্রে মূসক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশী। শিল্পখাত রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং আমদানি হ্রাসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে দেশের অর্থনীতিতে অধিক ভূমিকা রাখে বিধায় তাদের প্রণোদনা প্রদান এবং ট্রেডিং কোম্পানীর তুলনায় নিম্ন হারে কর্পোরেট কর আরোপ করার প্রস্তাব করছি।

-সুষম আঞ্চলিক উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য শুধু ঢাকা বা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীক না করে দেশের উত্তরাঞ্চল সহ প্রত্যন্ত ও অনুন্নত অঞ্চলে বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন উৎসাহিত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগগ্রহণ করার জন্য নিম্ন লিখিত বিশেষ রেয়াতি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করে বিসিআই।

সোনালীনিউজ/আরএইচ

Wordbridge School
Link copied!