• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘বিনিয়োগকারীদের লাভবান ও সঠিক পথে রাখতে কাজ করবে সোনালী সিকিউরিটিজ’


মেহেদী হাসান সজল ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২, ১০:৫৩ এএম
‘বিনিয়োগকারীদের লাভবান ও সঠিক পথে রাখতে কাজ করবে সোনালী সিকিউরিটিজ’

সোনালী সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহসান

ঢাকা: পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনের দায়িত্বকালীন সময়ে মোট ৫৮টি ট্রেক বা ব্রোকারেজ হাউজের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত বছর ৫২টি ট্রেকের সনদ হস্তান্তর করা হয়। যার মধ্যে ৪টি ট্রেকের লেনদেন শুরু হতে যাচ্ছে। 

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) থ্রিআই সিকিউরিটিজ এবং রহমান ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট এর আনুষ্ঠানিক লেনদেন শুরু হয়েছে। আর আজ ১লা ফেব্রুয়ারি অপর দুটি প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেড এবং সোনালী সিকিউরিটিজ লিমিটেডের লেনদেন শুরু হতে যাচ্ছে। 

ব্রোকারেজ হাউজের স্বচ্ছতা, কমপ্লায়েন্স এবং পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়াতে এর অবদানসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় সোনালী সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শরীফ আহসানের সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন সোনালীনিউজ এর স্টাফ রিপোর্টার মো. মেহেদী হাসান

সোনালী সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শরীফ আহসান

সোনালীনিউজ : পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়াতে নতুন অনুমোদিত ট্রেকগুলো কতটা অবদান রাখবে বলে মনে করছেন?

শরীফ আহসান : পুঁজিবাজারকে আরো বন্ধুসুলভ করা, সহজ করা এবং অধুনিকায়ন করার যে পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে তার অংশ হিসেবেই নতুন ট্রেকগুলোকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ট্রেক ব্যবসায় যাদেরকে কমিশন অনুমোদন দিয়েছে তাদের সবারই ভালো অভিজ্ঞতা আছে বলে আমি মনে করছি। আমি যদি আমাদের সোনালী সিকিউরিটিজের কথা বলি তাহলে বলবো, আমাদের পরিকল্পনা আছে গতানুগতিক পন্থা থেকে বেরিয়ে আসার। আমাদের কিছু আধুনিক পরিকল্পনা আছে। গ্রাহকদের কাছে আমাদের সেবা আরো সহজভাবে পৌঁছানোর পরিকল্পনা আমাদের আছে। যার মাধ্যমে আমরা অনেক নতুন গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে পারবো বলে আশা রাখছি।

সোনালীনিউজ : বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষায় কমপ্লায়েন্স, কিংবা ঝুঁকি বহনে আপনার ট্রেক কতটুকু দায়িত্বশীল থাকবে বলে মনে করছেন?

শরীফ আহসান: শেয়ারবাজার কোন ফটকাবাজার না। আজকে বিনিয়োগ করে কেউ যদি কালকেই বড় মুনাফা করে নিতে চায়, সেটা এই বাজারের জন্য কাম্য নয়। তাদের আমি শেয়ারবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করবো। এটা কোন দুর্নীতিবাজদের প্লাটফর্ম না। জেনে-বুঝে নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোথায় বিনিয়োগ করবে সে। একটু দেখে শুনে বিনিয়োগ করলে এই মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের লাভবান হওয়ার যেমন অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনি জিডিপি’তেও বড় অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে কেউ যদি বুলিশ মার্কেটে তাৎক্ষণিক লাভবান হতে চায়, তাহলে তাকে আমরা এর ভালো-মন্দ উভয় দিক সম্পর্কে সচেতন করবো। এক্ষেত্রে ট্রেক হিসেবে আমরা তাকে ভালো-মন্দ ব্রিফ করতে পারবো কিন্তু পোডাক্ট ক্রয়-বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রাহককেই নিতে হবে। এই ঝুঁকি বহন করার দায়িত্ব ট্রেডিং হাউজের না। আমাদের রিসার্চ টিমের মাধ্যমে আমরা পারবো গ্রাহককে ভালো-মন্দ সম্পর্কে সতর্ক করতে। কিন্তু তারপরও যদি গ্রাহক ভুল সিদ্ধান্ত নেয় সেটার দায় ব্রোকারেজ হাউজের না। তবে কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠার দিকে আমাদের সবসময় নজর থাকবে।

সোনালী সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শরীফ আহসান

সোনালীনিউজ : সোনালী সিকিউরিটিজের কার্যক্রম কি শুধু ঢাকা কেন্দ্রীক হবে, নাকি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে?

শরীফ আহসান: আস্তে আস্তে সকল ব্রোকারেজ হাউজের কার্যক্রমই অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসের (ওএমএস) মধ্যে যাবে। তখন আসলে ব্রোকারেজ হাউজের কার্যক্রম কোন ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর কার্যক্রম নেটের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী থাকবে। তখন দেশের বাহিরে থেকেও কোন প্রকার বুথের সাহায্য ছাড়া মোবাইলের মাধ্যমে ট্রেড করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে তার পেমেন্ট করে দিতে হবে। আর ফরেন কারেন্সি করতে চাইলে ব্যাংকের মাধ্যমেই করতে হবে। ইতিমধ্যে দুটি ব্রোকারেজ হাউজ ওএমএস চালু করেছে। আমাদের নতুন অনুমোদিত হাউজগুলোকেও এই সিস্টেমস যুক্ত করার জন্য ৯ মাস সময় বেধে দেয়া হয়েছে। আমাদেরকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ মাত্র পাঁচটি ট্রেডিং ওয়ার্ক স্টেশন (টিডব্লিউএস) দিয়েছে। শুরুতেই খুব বড় ট্রেডিং হাউজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো করে আমরা অনুমোদন পাইনি। তবে আস্তে আস্তে আমাদের কার্যক্রম বাড়বে। আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে আমাদের ঢাকার বাহিরে কয়েকটি ব্রাঞ্চ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও কিছু ডিজিটাল বুথ স্থাপনের বিষয়ে আমরা চিন্তা করছি।

সোনালী সিকিউরিটিজ লিমিটেড

সোনালীনিউজ : সকল ব্রোকারেজ হাউজে ওএমএস সেবা চালু করা কি বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্ভব হবে বলে মনে করছেন?

শরীফ আহসান: নতুন ওএমএস নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা করাও খুব একটা সহজ কাজ হবে না। আমার জানা মতে বড় বড় যে দুটি ব্রোকারেজ হাউজ ওএমএস নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে, তারাও এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সার্ভিস দিতে পারছেনা। পুরোনো সিস্টেমস এখনও তাদের ব্যবহার করতে হচ্ছে। যদিও তারা দুই বছর ধরে এটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালিয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন হাউজগুলোর জন্য ওএমএস পরিচালনা করাটা কিছুটা কষ্টকর হয়ে যাবে। তাছাড়া আমরা নতুন ৫৮টি ট্রেক ও পুরাতন প্রায় ২০০টি ট্রেক যদি মার্কেটে ওএমএস নিয়ে আসি তাহলে কোন ম্যাসিং ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে লোড নেয়া সম্ভব হবে না। আমরা যে ওএমএস এর বিপক্ষে সেটা না, তবে আমরা সময় সাপেক্ষে অনুকূল পরিবেশে এটা চাই। আমরা এই বিষয়গুলো ডিএসইকে অবহিত করেছি। এটা নিয়ে ডিএসইও একটি ইতিবাচক পরিকল্পনা করছে যেটা খুব শিগগিরই সামনে আসবে। যা আমাদের জন্য খুবই বন্ধুসুলভ হবে বলে মনে করছি।

সোনালীনিউজ : বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে আপনার একটি সংক্ষিপ্ত ম্যাসেজ শেয়ার করুন।

শরীফ আহসান: আমরা কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেব না। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে একটি ট্রেডিং হাউজের যতগুলো নিয়ম কানুন থাকে, তার সবগুলো আমরা পালন করবো। তারপর বিনিয়োগকারী যদি ভূল পথে চলে যায়, তাকে সঠিক পথে ফেরাতে কাজ করবো। আমাদের ট্রেডার হিসেবে যারা যোগ দিয়েছেন তাদের সবার নূন্যতম অভিজ্ঞতা ১০ বছরের। সেই অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করে আমরা আমাদের বিনিয়োগকারীদের সঠিক পথে রাখার জন্য কাজ করবো। যেসকল বিনিয়োগকারী দুর্নীতি না করে, বুঝে-শুনে পরিকল্পিত বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হতে চাইবে তাদের জন্য সোনালী সিকিউরিটিজ একটি উত্তম প্লাটফর্ম হবে বলে মনে করছি। তাছাড়া আমাদের অভিজ্ঞতা ও মার্কেট নিয়ে গবেষণার ফল যখন বিনিয়োগকারীরা পেতে শুরু করবে তখন তারা আর এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করবে না বলে আশা রাখছি।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!