• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী

আলুর দাম বৃদ্ধিতে কোল্ড ষ্টোরেজ মালিকদের হাত নেই


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩, ০৫:৩৪ পিএম
আলুর দাম বৃদ্ধিতে কোল্ড ষ্টোরেজ মালিকদের হাত নেই

ঢাকা: আলুর দাম বাজারে যা-তা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আলুর দাম নিয়ে কারসাজি করছেন ব্যবসায়ীরা। আলুর দাম বৃদ্ধিতে কোল্ড ষ্টোরেজ মালিকদের হাত নেই বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ কোল্ড ষ্টোরেজ এসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। 

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আলুর বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে বাংলাদেশ কোল্ড ষ্টোরেজ এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি বলেন, বেশ কয়েকবছর একটানা কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা ক্রমাগত ক্ষতি হওয়ায় আলুর চাষ কম করা হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধেও কারণে গম, ভুট্টার চাষ বেশি হয়েছে। তাই আলু এ বছর চাষ ও উৎপাদন কম হয়েছে। 

বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩ সালে বিভিন্ন হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর পরিমাণ ২৩ লাখ ১২ হাজার মেট্রিকটন। ২০২২ সালে হিমাগারে সংরক্ষিত ছিলো ২৪ লাখ ১৯ হাজার ৭৬০ হাজার মেট্রিকটন। ২০২৩ সালে আলু ১ লাখ ৭ হাজার ২৩৪ মেট্রিকটন আলু কম সংরক্ষিত হয়েছে। 

কৃষি বিভাগের হিসেব মতে, ২৩ সালে ২৪ লাখ ৯২ হাজার ৮২ মেট্রিকটন আলু সংরক্ষিত হয়েছে। ২০২২ সালে ২৭ লাখ ৮ হাজার ৫৯৫ মেট্রিকটন আলু হিমাগারে সংরক্ষিত হয়েছিলো। তাদের হিসেবেই ২ লাখ ১৬ হাজার ৫১৩ মেট্রিকটন আলু বিভিন্ন হিমাগারে কম সংরক্ষিত হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত লসের মুখ দেখেছে আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্তরা। ৯৬ ভাগ হিমাগার ব্যবসায়ী ঋণ খেলাপী। তাদের আলু ক্রয় ও সংরক্ষণের ক্ষমতা নেই। হিমাগারে রাখা আলুর ৪০ ভাগ বীজ আলু, ৫৫ ভাগ খাবার আলু ও ৪ ভাগ শিল্পে ব্যবহৃত আলু। এক ভাগ হিমাগার ব্যবসায়ীদের কেনা হিমায়ীত আলু এক শতাংশ। 

৫৫ ভাগ আলু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে রাখেন। এই বছর আলু উৎপাদনে প্রতি কেজিতে খরচ হয়েছে ১২/১৩ টাকা। হিমাগারে রাখার খরচ প্রতি কেজি ৫/৬ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি কেজিতে খরচ ১৮-২০ টাকা। চলতি বছরের ২০ মে’র পরে হিমাগার থেকে খালাসকৃত আলুর দাম ছিলো ২৬-২৭ টাকা। যা বর্তমানে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৪-৩৬ টাকায়। যা আকাঙ্খিত।

তিনি বলেন, যে পরিমাণ আলু এই মুহূর্তে হিমাগারে আছে তাতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশের চাহিদা মেটানো যাবে। আর দামও আকাশছোঁয়া হওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এই কাজটি করছেন। তারা ইচ্ছে মতো আলুর দাম বৃদ্ধি করেছেন। আলুর দাম বৃদ্ধির জন্য হিমাগার মালিকদের দায়ী করা হচ্ছে যা কাঙ্খিত না এবং সঠিক নয়।


 
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের জানামতে ৮৫ লক্ষ মেট্রিকটন আলুর বেশি এবার দেশে উৎপাদন হয় নাই। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে ১ কোটি ১২ লক্ষ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হয়েছে। দেশের মানুষের চাহিদা ৯০ লক্ষ টন। বাকি ২২ লক্ষ টন আলু কোথায়? যেখানে কোল্ড ষ্টোরেজগুলোর ২০ শতাংশ খালি। তাহলে আমাদের প্রশ্ন যদি বেশি উৎপাদন হয় তাহলে আমাদের ২০ শতাংশ কেন খালি থাকবে। 

তিনি আরো বলেন, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু সরকার আমাদের জন্য কিছুই করেনি। সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলাম ভিজিএফ কার্ড ও অন্যান্য উপায়ে আলু মানুষকে দিতে। সেটাও দেয়নি সরকার। তখন আমাদের আলুগুলো বিক্রি হয়েছে ৭-৮ টাকায়। অথচ তখনও আমাদের হিমাগারে আলু রাখা নিয়ে খরচ হয়েছে ১৮ টাকা। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। সে সময় সরকার আমাদের জন্য এগিয়ে আসেনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার আমাদের কাছে চাইলে হিমাগারের সব তথ্য দেয়া হবে। হিমাগারে ম্যাজিষ্ট্রেট পাঠাতে হবে না। এতে আমাদের আরো সমস্যা হয়, হয়রানি হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চাইলে যেকোনো সময় আমাদের হিমাগারে রাখা আলুর পরিমাণ জানতে পারে। এতে কোনো সমস্যা নেই। আলুর দাম বৃদ্ধি করছে ব্যবসায়ীরা।  

সংবাদ সম্মেলনের আরো উপস্থিত ছিলেন, সহসভাপতি ইসতিয়াক আহমেদন, পরিচালক তারিকুল ইসলাম খান, পরিচালক গোলাম সারোয়ার রবিন, পরিচালক ফজলুল হক ও পরিচালক মনসুর বিন মাহবুবসহ অনান্যরা।

এআর

Wordbridge School
Link copied!