ঢাকা: পাঁচ দফা দাবির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হলে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
হলে থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এ দাবিতে শনিবারও তারা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মধ্যে শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে হলত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
তবে সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা হল ছাড়বেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করবেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ’কে ৮১’ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাফিস রাফিদ শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, কর্তৃপক্ষ হল খালি করার মাধ্যমে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে। এ কারণে তারা হল ছাড়বেন না।
হল খালি করে নতুন বাজেট এনে অস্থায়ী শেড নির্মাণ এবং নতুন হল নির্মাণ শুরু করা যদি কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য হয় তাহলে আমরা এটা স্বাগত জানাই। কিন্তু হল খালি করে আন্দোলন স্তিমিত করা যদি হয় উদ্দেশ্য, তাহলে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি। ঘটনাক্রম পর্যবেক্ষণ করে আমাদের কাছে দ্বিতীয়টাই বেশি সম্ভাবনাপূর্ণ মনে হচ্ছে। এ কারণে আমরা হল ছাড়ব না।
তার অভিযোগ, অধ্যক্ষ শনিবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে 'মিথ্যাচার' করেছেন।
তিনি বলেছেন চার তলা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও কিছু শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করছে। এটা মিসলিডিং। তিনি বলেছেন চার তলা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পর বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, কিন্তু তা করা হয়নি। তিনি লিখেছেন, কে-৮২ ব্যাচ কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ওরিয়েন্টেশন বর্জন করেছে। আমরা তার এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।
আরেক শিক্ষার্থী নাজসুব সাকিব বলেন, পাঁচ দফা দাবি মানা না হলে হল ছাড়বেন না তারা। পাশাপাশি স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে এসে হলের পরিস্থিতি দেখতে হবে।
আমাদের পাঁচ দফা যে দাবি তা মানা না হলে আমরা হল ছাড়ব না। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা আসবেন। তারা সরেজমিন দেখবেন আমরা কী অবস্থায় আছি। এটাই আমাদের আজকের সিদ্ধান্ত। শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে ফোন করা হলেও সাড়া দেননি অধ্যক্ষ কামরুল আলম।
শনিবার কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় মেডিকেল কলেজ বন্ধ এবং হল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবির আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা।
ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী শামীম আহমেদ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আবাসনজনিত নানা সংকটে ভুগছি, দুইটা হলের একটাও বসবাসের উপযোগী না।
'কয়েকদিন আগেও আমাদের হলের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। আমরা সেখানে থাকতে নিরাপদবোধ করছি না।'
তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে
১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে।
২. ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে।
৪. আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।
এআর







































