• ঢাকা
  • রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪, ২ আষাঢ় ১৪৩১

একসঙ্গে যত রেকর্ড কমলার


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ৯, ২০২০, ০৩:৫০ পিএম
একসঙ্গে যত রেকর্ড কমলার

ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ, প্রথম এশিয়ান বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন কমলা হ্যারিস। ৫৫ বছর বয়সি এ রাজনীতিক দেশটির প্রধান দুই দলের মধ্যে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করেই বাজিমাত করেছেন।

নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমেরিকার আড়াইশ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক এ সিনেটর। গড়লেন নতুন এক ইতিহাস। কমলা হ্যারিসের হোয়াইট হাউসের উদ্দেশে যাত্রাকে অনেকেই দেখছেন মার্কিন রাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক মোড় হিসেবে। কমলার বাবার জন্ম জ্যামাইকায় এবং মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইন্ডিয়ান আমেরিকান।

অর্থনীতিবিদ বাবা ও জীববিজ্ঞানী মায়ের সন্তান কমলার রয়েছে মায়া নামের এক বোন। কমলার জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকল্যান্ডে। কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ পাড়ায় দীর্ঘদিন থাকার পাশাপাশি তামিল মা ও জ্যামাইকান বাবার মিশ্র ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়েই বেড়ে ওঠা তার। কমলার বর্তমান বয়স ৫৬ বছর।

আমেরিকা যখন সিভিল রাইটস আন্দোলনে উত্তাল, তখনই ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠেন কমলা। বাবা-মা সেই ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে হাঁটতেন মিছিলে, জড়ো হতেন বিভিন্ন জমায়েতে। মা শ্যামলা জানিয়েছিলেন তার বড় মেয়েটি অর্থাৎ কমলার মুখে যখন সবে বুলি ফুটেছে, তখন সে মাঝে মাঝেই কান্নাকাটি করত আর কী চাই জিজ্ঞাসা করলে ঠোঁট ফুলিয়ে আধো আধো গলায় বলত, ‘ফিদম।’

ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলের কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় বাস করলেও কমলা পড়তেন অভিজাত থাউজেন্ড ওকস স্কুলে। সেই স্কুলে এক সময় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিল শ্বেতাঙ্গ। বর্ণভিত্তিক পৃথককরণের নীতি রদ হবার পর এই চিত্র বদলে যায়। কমলা যখন সেই স্কুলে ভর্তি হন, তখন সেখানে মোট শিক্ষার্থীর ৪০ শতাংশ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ।

কমলা হ্যারিস হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে স্নাতক হবার সময়ে নানা ধরনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন। ১৯৮৬ সালে স্নাতক হবার পর আইনে স্নাতকোত্তর করেন তিনি।

২০১৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার আইনজীবী ডগলাস এমহফকে বিয়ে করেন কমলা। ডগলাসের আগের পক্ষের দুই সন্তান রয়েছে, কোল ও এলা, যাদের কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশেও দেখা যায়। কমলা হ্যারিস রোজ সকালে ব্যায়াম করেন। ২০১৬-এর একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘রোজকার রুটিনে দুটি জিনিস আমাকে রাখতেই হবে। এক, ওয়ার্ক আউট। দুই, ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া।’ প্রথমটির মতো দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়েও খুবই উৎসাহী কমলা। নিজে রান্না করতে ভালোবাসেন। প্রায়ই সেইসব রান্নাবান্নায় তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন স্বামী ডাগ এমহফ। যখন খুবই চাপে থাকেন তখন রিলাক্স করার জন্য বিভিন্ন রেসিপির বই পড়েন কমলা।

২০০৩ সালে প্রথম নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিযুক্ত হন তিনি। তখন থেকেই ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা বাড়তে থাকে। পরে ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার জুনিয়র সিনেটর পদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ও জয়ী হন। সিনেটর হিসেবে তার ধারালো প্রশ্ন করার ক্ষমতা বার বার আলোচিত হয়েছে সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায়। টানা দুই টার্ম ধরে সফল অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে তার কাজও আলোচিত হয়েছে এতদিন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন টেলিভিশন অনুষ্ঠানে নিজের মিশ্র ঐতিহ্য বিষয়ে সাবলীল আলাপ তাকে জনসাধারণের কাছে আরো জনপ্রিয় করে তোলে।

এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার তার প্রতি সমর্থনও সাহায্য করেছে বলে মনে করেন অনেকে। সিনেটর পদে নির্বাচিত হবার পর কমলা বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সোচ্চার হন। সমকামীদের বিবাহের অধিকারের পক্ষে, মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে থাকার পাশাপাশি কমলা বিভিন্ন সময়ে পুলিশ নীতিতে বদলের দাবি তোলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!