ফাইল ছবি
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে হাইকোর্টে নতুন রিট দায়ের হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের ওপর বাড়ছে চাপ। নির্বাহী বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশন সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা এবং ‘ইলেক্টোরাল সার্ভিস কমিশন’ গঠনের নির্দেশনা চেয়ে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রিট করা হয়েছে। রিটে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন স্থগিত রাখারও আবেদন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হতে পারে।
রিটে বলা হয়, নির্বাহী বিভাগের ওপর নির্ভর করে নির্বাচন পরিচালনা করা সংবিধানসম্মত নয়। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নিজস্ব লোকবল থেকে সচিব ও মাঠপর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে। রিট পিটিশনার অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ডিসিদের নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা দিলে প্রভাবিত নির্বাচন ঠেকানো সম্ভব নয়।
এদিকে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নতুন রিটের পর পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে সহিংসতা হলে পুরো আসনের ভোট বাতিল করার ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে। কমিশন অবাধ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলেও জানান তিনি।
এ অবস্থায় বিএনপির ভেতরেও পাল্টে যাচ্ছে নির্বাচনী হিসাব–নিকাশ। দীর্ঘদিন রোজার আগে নির্বাচন চেয়ে আসা দলটি এখন প্রকাশ্যে কিছু না বললেও অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার সংকটপূর্ণ শারীরিক অবস্থা, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং অভ্যন্তরীণ কুন্দল-সব মিলিয়ে বিএনপি নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে নমনীয় হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলে ধারণা বাড়ছে।
মনোনয়ন পাওয়া ২৩৭ জন প্রার্থীর অনেকেই এখনো মাঠে নামার মতো প্রস্তুত নন। আরও ৬৩টি আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়নি। জেলায় জেলায় মনোনয়ন-বিরোধ, দলীয় পছন্দের প্রার্থীর বিরুদ্ধেও মশাল মিছিল-এসব সংকেত দেখাচ্ছে, দলটি এখন সময় চাইছে। নির্বাচন পিছোলে সংগঠন গোছানোর সুযোগ বাড়বে-এটিও বিএনপির কাছে এখন রাজনৈতিক সুবিধা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
একাধিক পর্যবেক্ষক বলছে, বিএনপি যে অবস্থান পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে তা স্পষ্ট। নির্বাচন কমিশনের ভেতরের অনিশ্চয়তা, রিটের তোলা প্রশ্ন এবং মাঠের রাজনৈতিক বাস্তবতা-সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া অনিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকেও নির্বাচনের সময় পেছানো নিয়ে কোনো আপত্তি নেই বলেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা বাড়ছে।
এসএইচ







































