• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
সাফিনা আক্তারের ভুলে থাকা পাপ সিরিজের পাঁচটি কবিতা

ভুলে থাকা পাপ


সাফিনা আক্তার আগস্ট ৮, ২০২১, ১২:৪৪ পিএম
ভুলে থাকা পাপ

ছবি (প্রতীকী)


যদি একবার ছুঁতে পারতাম তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ
তবে আর, আমি বাতাসের স্বর ছোঁবার সংকল্পে মেতে উঠতাম না,
যদি একবার ছুঁতে পারতাম তোমার ঠোঁটের রঙ
তবে আকাশের রঙ ধনু ছোঁবার স্বপ্নে বিভোর হতাম না,
তুমিই বলো- যদি তোমার হাতের মুঠোয় ছুঁয়ে থাকতো
আমার ঐশ্বরিক করতলের মুখস্থ আহ্লাদের সুর
তবে আমি হতাম পরম মমতার হিমছড়ির ঝর্নার মতো বহমান
যদি একবার ছুঁতে পারতাম তোমার মন- তো 
আমার জীবনের জন্ম হয়ে যেতো - আসয়াত পাথর
আর আমি মিলিয়ে নিতাম “লা-শারিকা লা” “ওয়াননেও মাতা”।


তুমি হতেই পারতে স্বরচিত কবিতার মতো
খাতায় লিপিবদ্ধ হবার পর‌ই ভুলে যেতাম
এস‌এস‌সি পরীক্ষার্থীর মতো, সে অংক পরীক্ষার দিন
জ্যামিতি বক্স ভুলে ফেলে রেখে যায় ঘরে
ভুলে যায় হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষার দিন
সঙ্গে নিতে ক্যালকুলেটর!
দ্বন্দ্বহীন ভাবে তোমাকে ভুলে থাকা যেত যদি
নিয়ম করে ---
অথচ বিচ্ছিন্ন হয়েও তুমিই দেবতার ঘর!
আমার ভেতরে অবশিষ্ট শ্বেত পাথর জমে যায়।
কার যেন জাদুর কারুকাজ চলে গোপনে
উত্তপ্ত আমি তখন ওয়াদিয়ে জ্বীন!
সমুদ্র জয়ী নাবিকের মতো নোঙর করো হৃদয় বন্দরে
যেমন ভুলে থাকা যায় রবিঠাকুরের গীতি
কবি নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত! অথবা
কংক্রিট পথ ছেড়ে দূরের ট্রেনের হূইসেল।
শুধু তোমাকে ভুলে থাকা পাপ মনে।


আই হ্যাভ সুপার ন্যাচারাল পাওয়া
বিশ্বাস হচ্ছে না তো?
কেন নয়?
এই যে অনায়াসেই আমি লিখে যাচ্ছি
ইয়াস কারনামা- উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা- জেরুজালেমের নিষ্ঠুরতা
অসহায় ফিলিস্তিনি চিৎকার
তুমি আসলেই বড্ড বেশি নিষ্ঠুর, দয়া মায়াহীন
কংক্রিট- যেন এক চীনের প্রাচীর।
আমি স্মৃতি কাতর লোভী- সংসারী মমতার
ভালবাসা চুম্বনে স্পর্শকাতর
এই যে তুমি দ্যাখো--- জগত কাবায় মাকামে ইব্রাহিম চিহ্ন
অথচ তোমার মনকাবায় আমি বিলিন- চিহ্নহীন
আমার তোমার মনমোকাম তো কোটি বছরের ইতিহাস
তুমি কেবল পারো পাষাণ হতে
ভুলে যেতে পারো আমার মুখমানচিত্রে 
অবশিষ্ট তিনশত পঁয়ষট্টি দিন!


আমার কাছে নতুন কোন ইস্যু নাই, নতুন ভাবে তোমাকে ভাবি।
কোথাও কোনও উদ্বৃত্ত, শব্দ নেই তোমার পক্ষে!
নেই কোনও কবিতা পঙক্তি,
সমস্ত ধুধু বালুচর, মরুভূমি সাহারার -
তবু এই আষাঢ়ের রাত্রি গুলো কেমন দীর্ঘ হয়
ঠিক কার্তিক মাসের রাতগুলো যেমন বড়
অথচ মুহূর্তগুলো প্রেমময় দীর্ঘ হতে পারতো
কেবল বিরহী বিধ্বস্ত হৃদয়ের আর্তনাদ নাই হতো
তুমি থেকে যাও নিভৃতে সমস্ত প্রার্থনায়!
আমি তোমাকেই ভুলে থাকতে চাই
উপরন্তু আমি যেন নিজেকে ভুলে-
শুধু তোমায় ভালবাসি আর নাম যপ করি
সর্ব শ্রেষ্ঠ বন্ধু তুমি ইয়া ওয়াদদুদু!


দেখেছো কী তুমুল ভাবে ভাঙ্গছে আকাশ?
থেকে থেকেই মেঘলা হচ্ছে ঝরছে মেঘের ফলা
বললাম তুমি প্রিয় আরবি হরফের মতো সুন্দর
বা আলিফ লাম মীম!
বললাম কালো চোখ সুন্দর তীক্ষ্ণ চাহনি!
তুমি নীল মেঘের পর্বত - বাঁকা ঠোঁটে মিষ্টি হাসো
এই যে ধরার বুকে বর্ষণ তুমিও অমিয় ধারা;
আমি চিঠির খামে বৃষ্টির দিন ভরে রেখেছি
যখন রাত্রি নির্ঘুম হতে থাকে আমি রিমঝিম শব্দ শুনি
একাকিত্ব -নয়তো তোমার কণ্ঠে শ্রাবণ সঙ্গীত
তুমি ধীরে ফুলকি জ্বেলে দাও অন্তরে
প্রদীপের মতো জ্বলে ওঠে কথার পশরা
কোন প্রার্থনা জমা রেখেছও কি মনে?
আমি তো সমস্ত‌ই উজাড় করেছি তোমার নামে
শুধু মুঠো ভরে তুলে নিতে তোমার চোখের মায়া।

সোনালীনিউজ/এসএন

Wordbridge School
Link copied!