• ঢাকা
  • সোমবার, ১৭ জুন, ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১
তৈরি পোশাক রপ্তানি

অব্যবহূত সম্ভাবনাময় উপসাগরীয় বাজার


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১, ০৫:৩১ পিএম
অব্যবহূত সম্ভাবনাময় উপসাগরীয় বাজার

ঢাকা : সরকারি-বেসরকারি খাতের উদ্যোগের অভাবে বাংলাদেশ উপসাগরীয় দেশগুলোতে ১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি বাজার হারাতে বসেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, কুয়েত এবং বাহরাইনসহ আরব রাষ্ট্রগুলোর একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইউনিয়ন হলো উপসাগরীয় সহযোগী সংস্থা (জিসিসি)।

ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের তথ্যমতে, শুধু ২০২০ সালেই সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববাজার থেকে ৪.৪০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পোশাক আমদানি করেছে; যেখানে সৌদি আরব করেছে ৩.০১ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের, কুয়েত ১.১৩ বিলিয়ন ডলার, কাতার ৬৬০ মিলিয়ন ডলার, ওমান ৬০৮ মিলিয়ন ডলার এবং বাহরাইন আমদানি করেছে ২৭৪ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পোশাক।

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে, বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৫ শতাংশ এবং সৌদি আরবে প্রায় ৪ শতাংশ এবং বাকি দেশগুলোতে এক শতাংশের কম সরবরাহ করতে পারে। যার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় মাত্র ৩৬৭.৪৯ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, উপসাগরীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের বাজারগুলোতে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য একটি বড় সুযোগ রয়েছে। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সেসব বাজার অন্বেষণের পরিকল্পনা করছি। উদ্যোগের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে এ বাজারটি অব্যবহূত রয়েছে।

তিনি বলেন, উপসাগরীয় দেশটিতে তাদের ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মীয় পোশাক রপ্তানির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে; পাশাপাশি রয়েছে পশ্চিমা পোশাকের চাহিদাও। টিএডি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশিকুর রহমান তুহিন বলেন, আমরা গতানুগতিক বাজারের দিকেই মনোনিবেশ করছি। কারণ এখান থেকে অর্ডার পাওয়া বেশ সহজ।

অন্যদিকে, নতুন বাজার অন্বেষণের জন্য আরও প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলোর মতো নতুন বাজারের ক্ষেত্রে যথাযথ পূর্বাভাস এবং অঞ্চল বা একক দেশভিত্তিক এক্সপো বা প্রদর্শনী প্রয়োজন, যা গ্রাহক এবং উৎপাদকের মাঝে যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নিয়ে জিটুজি মিটিংয়ের আয়োজন করতে পারে, যেখানে উৎপাদনকারীদেরও যোগদানের সুযোগ থাকবে। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে পরবর্তীতে বিটুবি মিটিংয়ের মাধ্যমে সম্ভাব্য গ্রাহকদের খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।

বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, একক দেশ প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য আমরা আমাদের কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি, কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলে রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পাবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের কূটনীতিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতেই আমাদের আলোচনা আটকে আছে।

বিজিএমই’র সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দীন আহমদ বলেন, সরকারি উদ্যোগের অভাবে উপসাগরীয় বাজারে একটি বিশাল সুযোগ এখনো অব্যবহূত। এটি আমাদের অন্যান্য রপ্তানি সামগ্রী, যেমন চামড়াজাত পণ্য, পাট এবং সিরামিকের জন্যও একটি বড় বাজার তৈরি করতে পারে।

তিনি মনে করেন, ইপিবির উচিত প্রতিটি দেশে একটি মেলার আয়োজন করা। তাদের উচিত সেই দেশের আমদানিকারকদের মেলায় আমন্ত্রণ জানানো, যেন তারা আমাদের পণ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারে। এবং এটি শুধু পোশাকের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, রপ্তানিযোগ্য অন্যান্য পণ্যও এখানে প্রদর্শন করা যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, এই উদ্যোগকে সফল করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলোকে সক্রিয় করে তুলতে পারে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!