• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রী নির্যাতনকারী ম্যাজিস্ট্রেটের শাস্তি ‘তিরস্কার‍‍`!


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ৭, ২০২২, ০১:৫১ পিএম
স্ত্রী নির্যাতনকারী ম্যাজিস্ট্রেটের শাস্তি ‘তিরস্কার‍‍`!

সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান।ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পর সরকারি কর্মকর্তাকে নাম মাত্র শাস্তি দিয়ে দায় সেরেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামানকে এই শাস্তি দেওয়া হয়। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আলী আজম সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানা যায়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রাক্তন সহকারী কমিশনার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কিশোরগঞ্জ (বর্তমানে সহকারী কমিশনার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পটুয়াখালী হিসেবে কর্মরত)-এর বিরুদ্ধে তার স্ত্রী মোছা. লাইজু আক্তার, পিতা- মো. জেনারুল হক, গ্রাম-মানসিংহপুর, ডাকঘর-রাধানগর, উপজেলা-বদরগঞ্জ, জেলা-রংপুর-এর সাথে যোগাযোগ না রাখা, স্ত্রীর মর্যাদা না দেয়া, খারাপ আচরণ করা, ডিভোর্সের হুমকি প্রদান; প্রকৃতি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ এর (য) বিধি মোতাবেক ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করে অভিযোগনাম ও অভিযোগ বিবরণী প্রণয়নপূর্বক তার নিকট প্রেরণ করা হয়। তিনি অভিযোগন্যমা ও অভিযোগ বিবরণী প্রাপ্ত হয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিত বক্কর দাখিল করেন এবং ব্যক্তিগত শুনানির জন্য ইচ্ছা পোষণ করেন; সে পরিপ্রেক্ষিতে ২৯/০৭/২০২০ খ্রি. তারিখে ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ব্যক্তিগত শুনানি অন্ত অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি (২)(ঘ) অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা নিযোগ করা হয়; তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

যেহেতু, তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান (পরিচিতি নং-
১৭৭-২০]-এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামত প্রদান করা হয়েছে; এবং যেহেতু, তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায় তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জবানবন্দী, জেরা ও প্রান্ত দলিল দস্তাবেজসমূহ পর্যালোচনা শেষে এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় অভিযুক্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান তার পরিবারের অমতে বিবাহ করেন; কিন্তু বিবাহের পর তিনি বিবাহের তথ্য গোপন রাখেন; বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে তিনি তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক না রাখার চেষ্টা করেন। 

পরবর্তীতে সামাজিকভাৱে স্ত্রীকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে মৌ আরিফুজ্জামান এবং তার পরিবার অনীহা দেখান; তদন্ত প্রতিবেদন মতে, অভিযুক্ত কর্মকর্তা তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী মো. আরিফুামান ও মোছা. লাইজু আক্তার উভয়ের বাবা-মা, জেলা প্রশাসক, কিশোরগঞ্জ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে মো. আরিফুজ্জামান তার অতীত ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চান এবং আপোষ মিমাংসার ইচ্ছা পোষণ করেন; এছাড়া তিনি তার স্ত্রীকে যথাযথ মার্যাদা প্রদানের বিষয়ে অঙ্গীকার করেন; কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তার প্রতিমূর্তি ভঙ্গ করেছেন এবং বিবাহিত স্ত্রীকে মার্যাদা না দেয়ার জন্য পায়তারা করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, মো. আরিফুজ্জামান একজন ধূর্ত, হিংস্র এবং জটিল প্রকৃতির মানুষ; তার আচরণ মার্জিত নয়; যাবতীয় সমস্যার জন্য তিনি স্বামী এবং তিনি বিষয়টি জটিল করে রেখেছেন; তার এহেন কার্যকলাপ প্রশাসন ক্যাডারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে এবং সরকারি অফিসের শৃঙ্খলা নষ্ট করেছে। যেহেতু, নথি, তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি পর্যালোচনায় দেখা যায় জনাব মোঃ আরিফুজ্জামান এর বিরুদ্ধে রুজুকৃত বিভাগীয় মামলায় আনীত ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগ তদন্তে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে; তাই সরকারি কর্মচারী (শরপা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী তিনি শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। তবে অভিযুক্ত একজন নবীন কর্মকর্তা হওয়ায় তার প্রতি কিছুটা নমনীয় মনোভাব পোষণ করা হলো।

তাকে ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড প্রদান করা হলো।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!