ঢাকা: ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে পাঠানো এক শোক বার্তায় তিনি এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
শোক বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘আহমেদাবাদে ২৪২ জন যাত্রী বহনকারী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানের দুর্ঘটনার খবরে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক সহানুভূতি ও সমবেদনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুঃসময়ে আমরা ভারতের জনগণ ও সরকারের পাশে আছি। প্রয়োজনে সব ধরনের সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত। অনুগ্রহ করে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও বিবেচনায় আমার আশ্বাস গ্রহণ করুন।’
এদিকে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ফ্লাইটটিতে থাকা ২৪২ জন আরোহীর সকলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অহমদাবাদের পুলিশ কমিশনার।
দেশটির গণমাধ্যম নিউজ১৮ জানিয়েছে, ফ্লাইটটিতে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর সকলের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ১৩৩ জন নিহতের খবর জানিয়েছিলো গণমাধ্যমটি। অন্য একটি গণমাধ্যম আনন্দবাজার আনলাইন ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।
জানা গেছে, অহমদাবাদের বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পাঁচ মিনিট পরে অহমদাবাদের মেঘানি নগর এলাকায় ভেঙে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। যে ভবনে বিমানটি আছড়ে পড়েছে, সেখানে অহমদাবাদ সিভিল হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা থাকতেন। এমনটাই বলছে প্রশাসনের একটি সূত্র। তবে ওই বাড়িটির কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানা যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, ওই বহুতলে প্রায় ৫০ জন ইন্টার্ন থাকতেন। দুর্ঘটনার সময়ে যারা সেখানে ছিলেন, সকলেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পরপরই শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার নির্দেশে অহমদাবাদ বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বিমানটি কলেজের ছাত্রাবাসে আছড়ে পড়ার পর সেখানে হৃদয়বিদারক ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃস্টি হয়। ইতিমধ্যেই একাধিক শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে কিছু বলা হয়নি।
বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের প্লেনটি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছু সময় পরই মেঘানীনগরের একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এসময় এতে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্যসহ মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন।
যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। প্লেনটিতে আরও ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডীয় নাগরিক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর থেকেই ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। বিমানবন্দর এলাকার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে। এখন পর্যন্ত হতাহতের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি, তবে বহু হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়া বলেছে, দুর্ঘটনার বিস্তারিত জানতে তদন্ত চলছে এবং যথাসময়ে আরও তথ্য জানানো হবে।
আইএ