ঢাকা : ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউটিও) সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে কাজ করতে জেনেভায় ইকোনমিক মিনিস্টিার পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদে কর্মরত কর্মকর্তার বাণিজ্যিক কূটনৈতিক তৎপরতার ওপর নির্ভর করে দেশের ভাবমূর্তি। গুরুত্বপূর্ণ এই পদে আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে তোড়জোড় চালাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রভাবশালী দুই উপদেষ্টা সুবিধাভোগী কর্মকর্তাকে নিয়োগ না দিয়ে দলনিরপেক্ষ বা বিগত সরকারের সুবিধা নেননি এমন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য খোদ বাণিজ্য উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন। এরপরও এক নম্বরে সেই কর্মকর্তাকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সারসংক্ষেপ অনুমোদন পেতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বাংলাদেশ দূতাবাসে ইকোনমিক মিনিস্টার পদে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন এই পদে বেশকিছু যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা প্রাথী হিসেবে আবেদন করেন। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ মে চূড়ান্তভাবে ছয় যুগ্ম সচিবকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন নিয়োগ কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন (তৎকালীন) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান।
বাণিজ্য উপদেষ্টার কক্ষে প্রার্থীদের অনুষ্ঠিত ওই মৌখিক পরীক্ষায় বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধূরী।
মৌখিক পরীক্ষার পর চুড়ান্ত নিয়োগ দিতে ২ জন কর্মকর্তার প্রস্তাব করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সারসংক্ষেপ অনুমোদন পেতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই দুই কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন। বিসিএস ২১ ব্যাচের (কাস্টমস) ক্যাডারের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ জহিরুল কাইয়ুম । কাস্টমস ক্যাডার থেকে প্রশাসনে উপসচিব পদে যোগ দেওয়ার পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০২৪ সালে ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস বাংলাদেশ দূতাবাসে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর পদে কর্মরত ছিলেন। তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে তিনি ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ বছর ১১ মাস ১ দিন ওই পদে ছিলেন।
২০২৩ সালে যুগ্ম সচিব পদোন্নতি পেয়ে অদ্যাবধি অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংযুক্তিতে রয়েছেন। এই কর্মকর্তা বিগত সরকারের আমলে দূতাবাসে কাউন্সিলর নিয়োগ পেয়ে সুবিধা পেলেও তিনিই আবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বাংলাদেশ দূতাবাসে ইকোনমিক মিনিস্টার পদে নিয়োগ পাচ্ছেন।
এ ছাড়াও তালিকায় দুই নম্বরে রাখা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আরেক সুবিধাভোগী কর্মকর্তা ড. রহিমা খাতুনকে। তিনি ২০২০ সালের ২৫ জুন থেকে ১১ মার্চ ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাদারীপুর জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ছিলেন। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেখানে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পদায়ন না দিতে একাট্টা, সেখানে দূতাবাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের নিয়োগ দিচ্ছে।
এসআই/পিএস







































