• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন খালেদা জিয়া


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন খালেদা জিয়া

ঢাকা : উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি। জানা গেছে, মেডিকেল বোর্ড সায় দিলেই যুক্তরাষ্ট্রে অথবা যুক্তরাজ্যে যাবেন তিনি। তার চিকিৎসকরা জানান, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

জানা গেছে, বিদেশে খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপনসহ জটিল চিকিৎসাগুলো করা হবে। তবে বিমানে লম্বা সময় ভ্রমণের মতো উপযুক্ত শারীরিক সুস্থতা না থাকায় তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য কাতার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে সেই প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত তিন বছরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও শেখ হাসিনা সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরদিনই খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করে সরকার।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। যুক্তরাজ্যে নেওয়া হলে ৮ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রয়োজন ১৮ থেকে ২১ ঘণ্টা ফ্লাইং আওয়ার। কাজেই এই যাত্রার জন্য তাঁর শারীরিক সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কিছুটা সময় লাগবে। বেশকিছু জটিল চিকিৎসা করাতে অনেকটা সময় তাকে বিদেশে থাকতে হবে।

মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. আল-মামুন বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য দেশের বাইরে থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনা হবে। বোর্ডের আরেকজন সদস্য বলেন, কাতারের কাছ থেকে বিমান আনার চেষ্টা চলছে। নানা পর্যায়ে কথাবার্তা চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরেকটু ফিট হলেই দিন, তারিখ ঠিক করা হবে। খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ছাড়াও বেশ কয়েকটি জটিলতা রয়েছে। এসব বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

এই চিকিৎসক বলেন, আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন করা। তবে এর আগে তাঁর পুরো শরীর চেকআপ করে অন্য জটিলতাগুলো কমিয়ে আনতে হবে। প্রথমেই লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তাই শারীরিক অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন এখন কেমন আছেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের চেয়ে ভালো আছেন। প্রতিদিন চিকিৎসকরা নিয়ম করে বাসায় গিয়ে ফলোআপ করছেন। বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা আসছেন। তিনি সবার সঙ্গে  কুশল বিনিময় করছেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। তাঁর ঘুম ও খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে। স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটারগুলো সঠিক মাত্রায় রয়েছে। তবে বয়সের কারণে মাঝেমধ্যেই কিছু জটিলতা দেখা দেয়।

উল্লেখ্য, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। গত জুনে অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ারের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে তার হৃদযন্ত্রে বসানো হয় পেসমেকার। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে তাঁর লিভার সিরোসিস রোগের চিকিৎসা দিতে ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত জনস হপকিন্স হাসপাতালের তিন চিকিৎসক।

চিকিৎসা শেষে গত ২ জুলাই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সব শেষ গত ৮ জুলাই হঠাৎ প্রেশার ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেই থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

চার বছর আগে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন সময়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয়েছে। গত ছয় বছরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও এভারকেয়ার হাসপাতালে দেড় বছরেরও বেশি সময় ভর্তি থাকতে হয়েছে তাকে।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!