ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলার মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে প্রথমে তিস্তার পানি দিতে হবে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। আর দাদাগিরি চলবে না। তাহলে বন্ধুত্ব হতে পারে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চরে ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় এলো তখন সবাই ভাবলো ভারতের বন্ধু এবার মনে হয় পানি আনতে পারবে। ১৫ বছরে তারা দেশ বেচে দিয়েছে। তিস্তার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেনি। ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি উত্তোলন করেছে। একদিকে তারা পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের শত্রুকে আশ্রয় দিয়ে রাজার হালে রেখেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভারতকে স্পষ্ট করে বলুন তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।
তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
আরও কেন্দ্রীয় ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্ততা জানান হায়দার, বিএনপির চেয়ারম্যান পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
'জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ -স্লোগানে অবস্থান কর্মসূচি পালনে দলে নদী পাড়ে দলে দেশের ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে এক যোগে টানা ৪৮ ঘন্টার ওই অবস্থান কর্মসূচিতে ৫ জেলার কয়েক লাখ মানুষ জমায়েত হয়েছেন।
সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা রেলসেতু ও তিস্তা সড়ক সেতুর মধ্যস্থানে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচীতে নারী পুরুষ দলে দলে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। ১১ টি পয়েন্টের তাবু গেড়ে ভেতরে মানুষ বিছানা পেতে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে লক্ষাধিক মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশাল বিশাল প্যান্ডেল ও শতাধিক তাবু টানানো হয়েছে। দুপুর গড়িয়ে জনসমুদ্রে পরিনত হয় তিস্তা নদী পাড়।
অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে নিলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী পাড়ের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি স্থানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। শেষদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি এসব মঞ্চে দিনভর থাকবে তিস্তা পাড়ের মানুষের সুখ দুঃখের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ভাওয়াইয়া গানের আসর, ঘুড়ি উৎসবসহ নানান গ্রামীণ খেলাধুলা। রয়েছে স্থানীয়দের নিজেদের চাল ডাল সহায়তায় খিচুরিসহ প্রয়োজনীয় খাবার ব্যবস্থা। এভাবে টানা ৪৮ ঘণ্টা তিস্তা নদীর তীরেই অবস্থান করবেন রংপুরের ৫টি জেলার কয়েক লাখ মানুষ। ওই অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে দীর্ঘ দিন ধরে করা হয়েছে প্রচারাভিযান।
আইএ