ফাইল ছবি
সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পে স্কেল বা বেতন কাঠামো নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। বহুবার আলোচনা, কমিশন গঠন ও আশ্বাসের পরও পে স্কেল প্রকাশ না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্রমশ বাড়ছে।
সরকার গত বছর একটি জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করেছে, যা সরকারি কর্মকর্তা‑কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো প্রস্তুত করার দায়িত্বে যুক্ত হয়েছে। কমিশনকে গত জুলাইয়ে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা করার সময় দেওয়া হলেও এখনও চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হয়নি। এর ফলে কর্মজীবীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা তৈরি হয়েছে।
সরকারি চাকরিজীবীরা দাবি তুলছেন যে, নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে তখনকার পে স্কেল ব্যবস্থার বৈষম্য দূর করা উচিত; সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ধরে ১৩ গ্রেডের পে স্কেল প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের দাবি আদায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সাক্ষাৎকার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কর্মস্থলে বড় ধরণের ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন পে স্কেল ঘিরে তোলা টানাটানির পিছনে সরকারি সিদ্ধান্তের বিলম্ব, অস্পষ্ট সময়সীমা ও বাস্তবায়নের অনিশ্চয়তা বড় ভূমিকা রাখছে।
এ ছাড়া সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলো পে স্কেল সংশ্লিষ্ট দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন। তারা পে কমিশন গঠন, সময়‑স্কেল ও নির্বাচন গ্রেড পুনঃপ্রবর্তন, পেনশন ও অন্যান্য ভাতার উন্নয়নসহ একাধিক দাবি তুলছেন।
শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে পে স্কেল দাবির সঙ্গে যুক্ত আন্দোলনও দেখা গেছে; প্রাথমিক শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড বেতনের দাবি নিয়ে ধরণা ও অনশন করেছেন, প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয়েছে।
পে স্কেল নিয়ে টানাটানির মূল কারণগুলো হচ্ছে- নতুন বেতন কাঠামোর ঘোষণা ও বাস্তবায়নে দীর্ঘ বিলম্ব, যা কর্মজীবীদের প্রত্যাশাকে সাথে সাথে পূরণ করছে না। বেতন কাঠামোর বৈষম্য দূর করার দাবি, বিশেষ করে নিম্ন গ্রেডের বেতন বাড়ানো ও ভাতার হারে উন্নয়ন। পে কমিশনের প্রতিবেদনের সময়সীমা পিছিয়ে গেলে কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা ও অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে। ধর্মঘট, ধরণা ও আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের চাপ সরকারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করছে।
সরকারি চাকরিজীবী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষ মনে করছেন, পে স্কেল না ঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে তা শুধু কর্মজীবীদের আর্থিক নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করবে না, বরং কর্মক্ষমতা ও সাধারণ জনগণের আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।
এ অবস্থায় সরকার ও বেতন কমিশনকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে টার্মিনেট সময়সীমা মেনে চলা ও কর্মচারীদের দাবি বিবেচনা করে সমাধান আনতে বলা হচ্ছে।
এসএইচ







































