ছবি : সাইকেল লেনের ওপর বিটিসিএল এর স্টাফ বাস ও অবৈধ টং দোকান ও প্রাইভেটকার
ঢাকা : রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ। যার একপাশ জুড়ে সংসদ ভবন এলাকা, অপর প্রান্তে খেলার মাঠ, বিটিসিএল’র টেলিফোন রাজস্ব ভবন, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, সেচ ভবন ও সংসদ সদস্যদের বাসভবনসহ বেশ কিছু স্থাপনা।
সম্প্রতি খামারবাড়ি থেকে আসাদগেট পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে তৈরি করা হয়েছে দেশের প্রথম সাইকেল লেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই সাইকেল লেনের ওপর পার্কিং করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার স্টাফদের বাস ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার। এমনকি কোথাও কোথাও বসেছে চায়ের টং। ফলে এই লেনটিতে এখন আর চলতে পারছেন না সাইকেল চালকরা।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, খামারবাড়ি খেলার মাঠ থেকে শুরু করে আসাদ গেট পর্যন্ত সাইকেল লেনের ওপর পার্কিং করা আছে স্টাফ বাস, সিটি করপোরেশনের পানি বহনকারী পিকআপ ভ্যান, সাইকেল-মোটর সাইকেল ও বেকারি ফুড ডেলিভারি ভ্যান। সেচ ভবনের সামনে পার্কিং অবস্থায় দেখা গেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১৮- ২৪৫১) এবং বেশকিছু ব্যক্তিগত গাড়ি। এছাড়া বেশ কয়েকটি চায়ের টং দোকানও রয়েছে সাইকেল লেনের ওপর।
সাইকেল লেন ধরে সামনে এগোতেই পুলিশ চেক পোস্টের বক্স। এখানে লেনের ওপর পুলিশ বক্স বসেনি। বরং আগে থেকেই ছিল পুলিশ বক্সটি। তাই কর্তৃপক্ষ এই পুলিশ বক্সের অংশটুকু বাদ রেখে সামনে এগিয়ে নিয়েছেন লেনের কাজ।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের একপাশে যখন এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থা, ঠিক তার উল্টো পাশে আসাদ গেট থেকে সংসদ ভবন হয়ে খামারবাড়ি মোড় পর্যন্ত সাইকেল লেনটি ছিল পার্কিং মুক্ত। তবে চলমান কিছু ব্যক্তিগত কার ও রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সাইকেল লেনের ওপর পার্কিং প্রসঙ্গে বিটিসিএল এর স্টাফ বহনকারী বাসের ড্রাইভার সোহেল বলেন, এগুলো সব বিটিসিএলের স্টাফ বাস। অফিসের গাড়ি, অফিসের সামনে। সরকারের অফিস, সরকারের গাড়ি, সরকারের জায়গা আমরা কই রাখমু।
সাইকেল লেনের ওপর কেন পার্কিং এমন প্রশ্নের উত্তরে সোহেল বলেন, আমরা কই রাখমু। সরকারের গাড়িতে সরকারের লোকজন অফিস করতে আসছে। আমরা কি করতে পারি। আমরা তো আপনাদের মতনই মানুষ।
সড়কে পার্কিংয়ের অনুমতি আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অফিসের ভিতরে গাড়ি ঢোকার মতো কোনো রাস্তা নেই। এই গেট দিয়ে গাড়ি ঢোকে না। আগে গাড়ি ভিতরে থাকতো কিন্তু এখন আর জায়গা নেই। বিটিসিএলের ব্যক্তিগত পার্কিং নাই এখন আমরা কই যামু।
আদাবর থেকে সাইকেল যোগে ইন্দিরা রোডে যাতায়াত করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাশেম আলী। তিনি অভিযোগ করে জানান, বেশিরভাগ সময় সড়কের মাঝে, আবার কখনও আইল্যান্ডে উঠে যেতে হয় সাইকেল নিয়ে। মাঝে মধ্যে কিছুটা লেন খোলা থাকে সেটুকু যায়, এরপর আবার সামনে গাড়ি তখন আবার সড়কে চলে আসতে হয়।
সংসদ ভবনের সামনে সাইকেল লেন করে দিলেও সেখানে বাস, প্রাইভেটকার পার্কিং করা থাকে। গাড়ির জন্যই তো আমরা সাইকেল লেন ব্যবহার করতে পারি না। রং সাইডে পার্কিং থাকার কারণে আমাদেরও ঝুঁকি নিয়ে সড়কের ওপর দিয়ে অন্যান্য গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে বলেও জানান এই সাইকেল আরোহী।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাইকেল লেন কিভাবে ব্যবহার করবো। লেনের ওপর যেভাবে পার্কিং করা হয়েছে এর জন্যইতো সাইকেল লেন ব্যবহার করতে পারছি না। সংসদ ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের লোকজনও তো দেখতেছে এরপরও তো কিছু বলতেছে না। আমরা সাধারণ মানুষ হিসেবে বলতে গেলেও অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। প্রশাসনের উচিত হবে তদারকির মাধ্যমে সাইকেল লেনগুলো চলাচলের উপযোগী রাখা। এতে করে আমরা যারা সাইকেল ব্যবহার করি তারা নিরাপদে চলতে পারবো।
সাইকেল লেনের ওপর বেশ কয়েকটি টং চায়ের দোকান দেখা গেছে। তাদের একজন নুরু। মধ্যবয়সী এ চা বিক্রেতা বলছেন, আপনারা (প্রশাসন) যখন আসবেন তখন আমরা সরে যাবো। রাস্তা ক্লিয়ার হয়ে গেলে আমরাও চলে যাবো, যখনই বলবেন তখনই সরে যাবো। সূত্র: সময়টিভি।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ







































