• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অভিভাবকদের মানববন্ধন


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪, ১২:৩৯ পিএম
রমজানে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অভিভাবকদের মানববন্ধন

ঢাকা : আসন্ন রমজানে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে একদল অভিভাবক।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ‘সচেতন অভিভাবক মহল’ ব্যানারে অভিভাবকরা এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।

অভিভাবকরা স্কুলের বার্ষিক ছুটির তালিকায় পরিবর্তন এনে ১০ বা ১৫ রোজা পর্যন্ত স্কুল খোলার রাখার হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। অভিভাবকরা বলেন, বছরের শুরুতে স্কুল ছুটির তালিকায় পুরেও রমজান মাসকে ছুটি আওতায় রাখা হয়েছিলো। বিষয়টিতে আমরা খুবই আশ্বস্ত হয়েছিলাম যে, আমাদের সন্তানরা রমজান মাসে ঠিক মত সিয়াম সাধনা করতে পারবে। কিন্তু কিছুদিন আগে, হঠাৎ করে ছুটি বাতিল করে বলা হলো, রমজানে স্কুল খোলা থাকবে। সিয়াম সাধনার মাসে এ ধরনের সিদ্ধান্ত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মারাত্মক হতাশ করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে রোজাদার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মারাত্মক কষ্টের সম্মুখীন হবেন, আর রোজাদারকে কষ্ট দেয়া চরম অমানবিকতা।

অভিভাবক মুহম্মদ জাইদুল ইসলাম বলেন, আমি আমার সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই রোজা রাখতে উৎসাহিত করি। কারণ রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের মাঝে নৈতিক গুণাবলী তৈরি হয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সন্তানদের চরিত্র গঠন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই সময় সন্তানদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ করে দেয়া খুব দরকার।

এক্ষেত্রে রমজান মাস একটি বড় সুযোগ, কারণ রমজান মাসকে আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন, তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে চরিত্র গঠনের জন্য। কিন্তু রমজান মাসে বাচ্চাদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ না দিয়ে, যদি ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয়, তবে তারা নৈতিকতা শিখবে কিভাবে? রমজান মাস তাকওয়া অর্জনের মাস, ক্লাস-পরীক্ষার মাস না।

মুহম্মদ জাইদুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা বাচ্চাদের পড়ালেখা করিয়ে বিদ্বান করছি ঠিক, কিন্তু সজ্জন বা চরিত্রবান করতে পারছি না। ফলে তারা বিদ্বান হলেও এখন দুর্জন বা চরিত্রহীন থাকছে। আর বিদ্বান দুর্জন হলেও পরিত্যাজ্য। নতুন প্রজন্ম রমজানে ক্লাস খুলে যতই পড়ালেখা করুক, তাদের নৈতিক চরিত্র যদি উন্নত না হয়, তবে তাদের দিয়ে দেশ ও জাতি কোনো উপকার পাবে না।

অভিভাবক মুহম্মদ পাভেল বলেন, আসন্ন রমজানে মাদ্রাসা বা কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মাসজুড়ে বন্ধ থাকবে, কিন্তু প্রাইমারী বা মাধ্যমিক স্কুলগুলো খোলা থাকবে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, মাদ্রাসা আর কারিগরি

প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই কি শুধু মুসলমান? রমজানে তারাই কি শুধু ছুটি পাবে? প্রাইমারী বা মাধ্যমিকের শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা কি মুসলমান নয়? যদি প্রাইমারী বা মাধ্যমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও মুসলমান হয়, তবে তাদের ছুটি কেন বাতিল করা হলো? মুহম্মদ পাভেল আরও বলেন, করোনার সময় ২ বছর সব বন্ধ রাখায় কোনো সমস্যা হয় না, কিন্তু রোজার ১০-১৫ দিন ক্লাস বন্ধ রাখলে পড়ালেখার বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে, এমন যুক্তি কখনই গ্রহণযোগ্য না।

অভিভাবক মুহম্মদ হাবীবুর রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। ধর্ম পালনের অধিকার জনগণের মৌলিক অধিকার, যা সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত। রোজায় স্কুল খোলা রেখে বাচ্চাদের ধর্ম পালনের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, যা সংবিধানের ৪১(১)ক ধারা পরিপন্থী। রাষ্ট্র তা কখনই করতে পারে না। আমার সন্তান যেন সঠিক উপায়ে ধর্ম পালন করতে পারে, সে সুযোগ রাষ্ট্রকেই করে দিতে হবে। সুতরাং রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে সিয়াম সাধনায় বাধা দেয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই বাতিল করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- অভিভাবক মুহম্মদ রেজাউল করিম, মুহম্মদ আমিনুল ইসলাম, মুহম্মদ আবু সায়েম প্রমুখ।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!