• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আনাস মাদানীর অপসারণের দাবিতে উত্তাল হাটহাজারী


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০, ০৭:০৭ পিএম
আনাস মাদানীর অপসারণের দাবিতে উত্তাল হাটহাজারী

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: হেফাজত ইসলামের আমির মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে হেফাজতের প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (বড় মাদ্রাসা)র ছাত্ররা। 

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে এরির্পোট লেখাপর্যন্ত (সন্ধ্যা পর্যন্ত) শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। মাদ্রাসার ফটক বন্ধ করে এ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়।

এসময় বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার সহকারি মহাপরিচালক মাওলানা শেখ আহমদ, শিক্ষক নুরুল ইসলাম জেহাদী ও মাওলানা আনাস মাদানীর দপ্তর ভাংচুর করেন। 

বিক্ষোভ কর্মসূচী থেকে মাঝে মাঝে হেফাজত ইসলামের আমির মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে হেফাজতের প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণ দাবি করা হয়। বড় মাদ্রাসায় বিক্ষোভের সংবাদ অবহিত হয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর)মশিউদৌল্লাহ রেজাসহ আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান গ্রহন করেন।

জানা যায়, গতকাল দুপুরের নামাযের পর শিক্ষার্থীরা হেফাজতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে মাদ্রসার শিক্ষার্থীরা সকল ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। সংবাদ অবহিত হয়ে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমিন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু মাদ্রাসার ফটক বন্ধ থাকায় তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি। তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি তিনি আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেন। 

সংবাদ অবহিত হয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা আশংকায় আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতম কর্মকর্তাসহ সদস্যরা মাদ্রাসার সামনে অবস্থান গ্রহন করেন। কিন্তু তারা মাদ্রাসার ফটক বন্ধ থাকায় ভিততে প্রবেশ করতে পারেনি। বিক্ষোভের কারণে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট খাগড়াছড়ি মহাসড়কে গাড়ি চলাচলের কোন সমস্যা হয়নি। তবে চারাদিকে মাদ্রাসায় গোলযোগের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আতংক দেখা দেয়। বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার ভিতরে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার জন্য বারবার মাইকিং করেন। কিন্তু মাদ্রাসার বাহিরে অবস্থানকারী উৎসূক জনতাকে শান্ত থাকার জন্য আহবান জানান।

বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি সম্ভলিত একটি প্রচার পত্র বিতরণ করা হলেও সেখানে কারা বা কাদের পক্ষ থেকে এ প্রচার পত্র বিতরণ করা হয়েছে তার কোন নিবেদন নেই। সংবাদকর্মীদের কাছে এ প্রচারপত্র সংরক্ষিত রয়েছে। 

৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- প্রথম দাবি মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে করা।

২.ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বাস্তবায়েন সকল প্রকার হয়রানি মূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। 

৩.আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব মাযূর এবং অক্ষম হওয়ার কারণে পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে। 

৪. ওস্তাদেরকে মাদ্রাসা থেকে বিয়োগ নিয়োগ পরিপূর্ণভাবে সূরার নিকট হস্তান্তর করতে হবে। 

৫.বিগত শূরার হক্কানী আলেমদেরকে পুনরায় নিয়োগ এবং সূরার মধ্যে দালালদেরকে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের এসব দাবি মানা না হলে পরবর্তী কর্মসূচী হিসাবে মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমির কার্যক্রম বন্ধ করা, আদর্শিক এ আন্দোলনের বাধা সৃষ্টি হলে সমস্ত কওমি মাদ্রাসায় আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে, তার জন্য জেল জুলুমসহ যেকোন ত্যাগের জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীরা তৈরি থাকবে বলে প্রচার পত্রে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে বিক্ষোভ ভাঙচুরের পর পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। তবে মহাসড়কে গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদকর্মীরা বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার ভিতরে অবস্থান করায় দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম ৫ দফা দাবিতে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ প্রদর্শনের কথা স্বীকার করে বলেন, সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা রোধ করতে  আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। 

সোনালীনিউজ/এমএএইচ/এসএ

Wordbridge School
Link copied!