• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

একটি ঘোষণায় এক রাতেই গায়েব ৮৪ গ্রামের অধিবাসী


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ৩০, ২০১৯, ০৬:৫৯ পিএম
একটি ঘোষণায় এক রাতেই গায়েব ৮৪ গ্রামের অধিবাসী

ঢাকা:  শিরোনাম দেখলে যে কারো কাছে বিষয়টি রহস্য মনে হবে। ঘটনাটি ১২৯১ সালের দিকে। পালিওয়াল ব্রাহ্মণরা আগমন করলে সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিতি পায় কুলধারা। চারপাশ মরু অঞ্চল হওয়া স্বত্ত্বেও ভারতের কুলধারায় পানির কোনো সংকট ছিলো না। ওই সময়টাতে এলাকার লোকে এতোটাই সমৃদ্ধি ছিলো যে প্রাচীন মন্দির থেকে শুরু করে, নিখুঁত নকশায় বানানো বিভিন্ন বাড়ি এখনও অক্ষত দেখা যায়।

এ সময় শোনা যায় কুলধারার ৮৪ গ্রামের অধিবাসীরা এক রাতেই তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তবে, এই অঞ্চলে শস্যের কোনো কমতি ছিলো না। কিন্তু তারপরেও কেনো ওই এলাকার বাসিন্দারা চলে গিয়েছিলেন তা আজও অজানা। কুলধারা ৮৪টি ছোট ছোট সম্প্রদায়ভিত্তিক গ্রাম মিলিয়েই গড়ে উঠে ছিলো। ১২৯১ সালের দিকে প্রায় পনের শ মানুষের বেশ সমৃদ্ধ এক জনপদ ছিলো কুলধারা। পালিওয়াল ব্রাহ্মণরা মূলত কৃষি কাজে দক্ষ ছিলো। 

ফলে এলাকাটি কৃষি এবং ব্যবসার জন্য বেশ বিখ্যাত ছিলো সেসময়। কিন্তু হঠাৎই এক রাতেই এই নগরী জনমানবহীন হয়ে পড়ে। রাজস্থানের মতো রুক্ষ অঞ্চলে যেখানে বসবাসের উপযোগী জায়গা খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার, সেখানে পানীয় জলের অভাব নেই, প্রকৃতিও তেমন রুক্ষ নয় এমন নগরী মানুষের বসবাসের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলো কেন, তা খুবই অবাক করা ব্যাপার।

আর ঘটনার অনুসন্ধানে গবেষক দল অনেক বছর ধরেই কাজ করেছেন। কিন্তু এখনও পুরো ঘটনা জানা যায়নি। গবেষক দল আপাতত ধারণা করছেন, মূলত এক অত্যাচারী দেওয়ানের ভয়েই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে স্থানীয়রা। ওই দেওয়ানের নাম ছিলো সেলিম সিং। তিনি কর আদায়ের জন্য সব ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় নিতো। এই সেলিম সিংয়ের একদিন নজর পড়ে কুলধারার গ্রামপ্রধানের সুন্দরী কন্যার দিকে। সে ওই মেয়েকে জোর করে বিয়ে করতে চায়, কিন্তু ব্রাহ্মণদের প্রতিবাদের মুখে তা সম্ভব হয় না। সেলিম সিং ওই মেয়েটির জন্য খুবই বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

তিনি ঘোষণা দেন গ্রাম প্রধানের মেয়ের সাথে বিয়ে না দিলে অস্বাভাবিক করের বোঝা মাথায় নিয়ে বাঁচতে হবে কুলধারার ৮৪টি গ্রামকে। সেই রাতেই ঘটে যায় এ অদ্ভুত ঘটনা। রাতারাতি ৮৪টি গ্রামের লোক যেন মিলিয়ে যায় বাতাসে! কারো কারো মতে, গ্রামবাসীরা দেওয়ানের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এক বস্ত্রে।

কারো মতে, কুলধারার অধিবাসীরা পরবর্তী সময়ে পশ্চিম রাজস্থানের যোধপুর শহরের কাছাকাছি কোনো একটি স্থানে বসতি গেড়েছিল। কিন্তু এই বক্তব্যের মধ্যে তেমন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় না। ৮৪টি গ্রামের লোক না-হয় রাতের আঁধারে গ্রাম ছাড়তেই পারে! কিন্তু এত বড় দল কোথাও যদি চলে বা পালিয়ে যায়, তবে কোথাও না কোথাও তো পথের মধ্যে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে।

অথচ কেউই তাদের দেখলো না তা কী করে সম্ভব! আর তারা যদি অন্যত্র গিয়ে বসতি গড়তো তাহলে তাদের বর্তমান প্রজন্মও থাকার কথা। কিন্তু পুরো ভারতে কুলধারা গ্রামের পালিওয়াল সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণদের কোথাও দেখা পাওয়া যায়নি। সেরকম তথ্যও কারো কাছ থেকে পাওয়া যায়নি!

সোনালীনিউজ/এএএইচ

Wordbridge School
Link copied!