• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রধানমন্ত্রীকে রিজভী

কোনো অজুহাত দেখাবেন না, গ্যাসের দাম কমান


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১০, ২০১৯, ০৪:৪২ পিএম
কোনো অজুহাত দেখাবেন না, গ্যাসের দাম কমান

ঢাকা: গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। অনতিবিলম্বে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা স্থগিত করুন। কোনো অজুহাত দেখাবেন না, গ্যাসের দাম কমান। অন্যথায় রাজপথে নেমে জনগণ দাবি আদায় করে নেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।  

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'গ্যাসে এ মুহূর্তে কোনো ভর্তুকি নেই। এলএনজি আমদানি করে তার ভর্তুকি দেয়ার জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং তাদের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন এলএনজি আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের বাড়তি খরচ মেটাতে জনগণের ঘাড়ে গ্যাসের দাম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে সাধারণ ভোক্তাদের কেন বাড়তি দাম দিতে হবে?'

তিনি বলেন, পৃথিবীর সব গণতান্ত্রিক দেশে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিতে ভর্তুকি দেয়া হয়। সরকার ভর্তুকি দেয় জনগণের টাকায়। কারণ এই ক্ষেত্রগুলোতে ভর্তুকি দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসসহ জীবনযাত্রার মান সহজ ও স্বস্তিদায়ক রাখা হয়। গ্যাসের দাম বাড়ার ফলে কলকারখানায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সর্বত্রই। সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে দুর্নীতি, অদক্ষতা এবং তারা যে দেশ পরিচালনায় অক্ষম তার প্রমাণ এই গ্যাসের দাম বাড়ানো।

রিজভী বলেন, নিশিতে ভোট ডাকাতির পর এখন বন্দুকের নলের মুখে জনগণের জানমাল জিম্মি করে ক্ষমতায় বসে যা ইচ্ছা তাই করছে এই অবৈধ সরকার। কোনো দায়বদ্ধতা না থাকায় একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা। শুধু সাধারণ মানুষের গায়ের ঘাম ঝরানো অর্থ লুণ্ঠনের জন্য গ্যাসের দাম বাড়িয়ে নাভিশ্বাস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের উত্থান এই সরকারের প্রধান উন্নয়ন। গোটা দেশের মানুষ যখন গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে আছে, তখন এ নিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সঙ্গে রীতিমতো রসিকতা করছেন। উনার ভাবখানা এ রকম যে, গ্যাসের দাম বাড়লেই বা কি বা ভ্যাটের পরিমাণ বা ইনকাম ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়লেই বা কি! আমরা তো জনগণের ভোটে ক্ষমতার মসনদে বসিনি! ভোট ডাকাতিতে যারা সহযোগিতা করেছে, তাদের পকেট ভারী করতে সব কিছু করব।

তিনি বলেন, গণবিরোধী সরকারের হিসাব খুবই সোজা। তারা চুরি করবে আর ক্ষতির টাকা জনগণের পকেট থেকে উসুল করে নেবে। গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে আট হাজার কোটি টাকা নেয়া হচ্ছে। গ্যাস খাতে লুটপাট, চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনায় ক্ষমতাসীনরা নানাভাবে জড়িত। এলএনজি আসার আগে সিস্টেম লস বা চুরি ছিল ৩ শতাংশ। এখন সেই চুরি ১২ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। অর্থাৎ ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চুরি হচ্ছে। এর দাম আমদানি মূল্যের হিসাবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। এখন এই চুরি গণবিরোধী সরকার বন্ধ না করে উল্টো জনগণকে শাস্তি দিচ্ছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন- ‘উন্নয়ন পেতে হলে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি মেনে নিতে হবে। এখন যে পরিমাণে দাম বাড়ানো হয়েছে, তার পরও বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি দিতে হবে।’

রিজভী আরও বলেন, গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। বিশ্ববাজারে দরপতনের এই সময়ে বাংলাদেশের গণবিরোধী সরকার গ্যাসের দাম গড়ে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। কৃষি, বিদ্যুৎ ও শিল্পে বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। সার উৎপাদনে বেড়েছে ৬৪ শতাংশ। ফলে জীবনযাত্রা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে অস্থির অবস্থা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যে গ্যাস ভারত কেনে ৬ ডলারে, পাকিস্তান কেনে ৮ ডলারে, সেখানে বাংলাদেশকে কেন তা ১০ ডলারে কিনতে হবে? দায়দায়িত্ব জনগণকে কেন গ্রহণ করতে হবে?

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!