• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আপত্তি নেই আ.লীগের

খালেদার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে ফের আলোচনা


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১০, ২০২০, ০২:১৮ পিএম
খালেদার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে ফের আলোচনা

ঢাকা : আগামী ২৪ আগস্ট শেষ হচ্ছে বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদার জিয়ার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের মুক্তির মেয়াদ।

তাই সাজা মওকুফকালীন ছয়মাস পর মুক্তির সময়সীমা আরও বৃদ্ধি করতে চায় বিএনপি ও তার পরিবারের সদস্যরা। ফলে জামিনের জন্য আইনি ও কৌশলগত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সরকারের কাছে আবেদন করবে তারা।

এদিকে আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির সময়সীমা বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি নেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।

দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, খালেদার মামলার সাথে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা যেকোনো মুহূর্তে মুক্তির সময়সীমা নিয়ে আবেদন করতে পারে। এটা আইনি বিষয়, রাজনৈতিক নয়।

তথ্যমতে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ২৫ মাস কারাভোগের পর চলতি বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান।

মুক্তির শর্ত হিসেবে নিজ বাসায় অবস্থান, দেশেই চিকিৎসাসেবা নেয়া এবং সাজা মওকুফকালীন ছয় মাস কোনোভাবেই দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, এমন শর্তে তাকে মুক্তি দেয় সরকার। সরকারের বেঁধে দেয়া সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ আগস্ট। ফলে জামিনের বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে বিএনপি ও তার পরিবারের সদস্যরা।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার দণ্ড হয়েছে আদালতের রায়ে। সরকার কখনোই আদালতের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না, করার সুযোগও নেই।

আওয়ামী লীগ আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। খালেদা জিয়া যে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেয়েছেন, সেই প্রক্রিয়ায় ফের মুক্তি পেলে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথাব্যথা থাকার কথা নয়।

বিএনপি সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ শেষ পর্যায়ে থাকলেও তার সময়সীমা আরও বাড়াতে চায় বিএনপি ও তার পরিবার। তারা মনে করছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়া প্রয়োজন।

ফলে চলতি মাসে জামিন বৃদ্ধির আইনি ও কৌশলগত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আগামী মাসের শুরুতেই সরকারের কাছে আবেদন করবে তারা।

খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অবস্থান জানতে চাইলে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ায় বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদার জিয়া ছয় মাসের জামিনে রয়েছেন।

সেই আইনি প্রক্রিয়াতেই যদি তার জামিনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয় তাহলে আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। আওয়ামী লীগ সবসময় আইনের ওপর বিশ্বাসী এবং শ্রদ্ধাশীল।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার মামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল এক-এগারোর সরকার। যে অভিযোগে মামলা হয়, আদালতে সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে তা প্রমাণিত হওয়ায় তিনি শাস্তি পান। সম্পূর্ণ আইনি  প্রক্রিয়ায় তিনি দণ্ডিত হয়েছেন।

দুর্নীতির মামলা মাথায় নিয়ে দীর্ঘ ২৫ মাস কারাবাসে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কারাবাসে তার দীর্ঘদিন কেটে গেলেও মাঠের রাজনীতিতে কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলতে পারেনি দলটির দায়িত্বশীল নেতারা। বরং রাজনীতির মাঠে নিষ্ক্রিয় ছিলো তাদের দলীয় কার্যক্রম।

কিন্তু নেত্রীর ছয় মাসের মুক্তির পর ঘরের রাজনীতিতে অনেকটাই সক্রিয় হয়ে উঠেছে দলটি। ফলে আগামীতে আইনি প্রক্রিয়ায় নেত্রীর মুক্তির সময়সীমা বৃদ্ধি না পেলে যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে নামতে পারে বিএনপি।

ফলে দলটির নেতাকর্মীদের কঠোর নজরদারিতে রাখবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। মূলত বিএনপি নেতাকর্মীরা যখনই রাজনীতির মাঠে আন্দোলন-সংগ্রাম করে, তখনি জ্বালাও পোড়াও, মানুষের ওপর পেট্রল নিক্ষেপ, বাসে আগুন দেয়াসহ বিভিন্ন নাশকতার সাথে জড়িয়ে পড়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। তাই তাদের সেই সকল কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখছে ক্ষমতাসীন দলটি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীরর সদস্য আবদুর রহমান আরও বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ায় গেলে আওয়ামী লীগের কোনো বাধা নেই। কিন্তু নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষের ওপর পেট্রল নিক্ষেপ করলে আওয়ামী লীগ তা প্রতিহত করবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘বিএনপি যদি বেগম খালেদার জিয়ার জামিনের জন্য আবেদন করে এবং আইন বিভাগ থেকে যদি প্রধানমন্ত্রী কাছে পাঠায়, অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী সেটা বিবেচনা করবেন।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!