• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রেনেড হামলা: মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন হলো যাদের


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১০, ২০১৮, ০৩:৪১ পিএম
গ্রেনেড হামলা: মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন হলো যাদের

ঢাকা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরী সহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরো ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার(১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালত এ রায় দেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জন:
১. জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন
২. সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জমান বাবর
৩. নএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী
৪. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম
৫. মাওলানা শেখ আবদুস সালাম
৬. বিএনপি নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল সালাম পিন্টু
৭. মো. আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে মো. ইউসুফ ভাট
৮. আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ ওরফে জিএম
৯. মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ
৬. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে ওভি
৭. মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর
আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল
জাহাঙ্গির আলম
৮. হাফেজ মাওলানা আবু তাহের
৯. হোসাইন আহমেদ তামিম
১০. মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জানদাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ
১১. মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ওরফে খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে শামিম ওরফে রাশেদ
১২. মো. উজ্জল ওরফে রতন
১৩. মোহাম্মদ লুৎফুজ্জামান বাবর
১৪. মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী
১৫. ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিম
১৬. আবদুস সালাম পিন্টু
১৭.  হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ

এদের মধ্যে মাওলানা তাজউদ্দিন ও মোহাম্মদ হানিফ পলাতক রয়েছেন। বাকি ১৭ আসামি কারাগারে আছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা গ্রেনেড নিক্ষেপ ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং এই অপরাধে সহায়তা করে হত্যা সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অভিযোগে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। প্রত্যককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ জন:
১. জঙ্গি শাহদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল
২. মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু উমর আবু হোমাইরা ওরফে পীর সাহেব
৩. মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির
৪. আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক
৫. হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া
৬. আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার
৭. আরিফুর রহমান ওরফে আরিফ
৮. মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন
৯. আনিসুল মোরসালিম ওরফে মোরসালিন
১০. মো. খলিল
১১. জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর
১২. মো. ইকবাল
১৩. লিটন ওরফে মাওলানা লিটন ওরফে দেলোয়ার হোসেন ওরফে জোবায়ের
১৪. তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া
১৫. হারিছ চৌধুরী
১৬. কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ
১৭. মুফতী শফিকুর রহমান
১৮. মুফতি আবদুল হাই,
১৯. রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু

২০০৪ সালের একুশে আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে দলীয় সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভী রহমান'সহ ২৪ জন, আহত হন বহু মানুষ।

এ ঘটনায় পরদিন রাজধানীর মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। তদন্তের নামে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির জজ মিয়া নামে একজনকে আটক করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে গ্রেনেড হামলার স্বীকারোক্তি আদায় করার ঘটনা নাটকীয়তার জন্ম দেয়। গণমাধ্যমে জজ মিয়ার আসল পরিচয় বেরিয়ে এলে থমকে যায় এ মামলার তদন্ত।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আবারো শুরু হয় এ মামলার তদন্ত। হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে, ২০০৮ সালের ৯ জুন জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান সহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় সিআইডি। শুরু হয় বিচার।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আদালতের নির্দেশে আবারো অধিকতর তদন্ত হয় আলোচিত এ মামলার। মুফতি হান্নান আবারো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে হামলার নেপথ্যে বিএনপি নেতা পলাতক তারেক রহমানের নাম উঠে আসে। তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক, বাবরসহ আরো ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা। ২০১২ সালের ১৮ মার্চ শুরু হয় দ্বিতীয় দফায় বিচারকাজ।

বিচার চলাকালে মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানসহ তিনজনের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হলে বিচার থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়। ৪৯ আসামির মধ্যে বাবরসহ ২৩ জন আসামি কারাগারে আছেন, ১৮ জন পলাতক এবং ৮ জন আছেন জামিনে। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন ও আসামিপক্ষে ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এতে সময় লাগে ১১৯ কার্যদিবস।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!