• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চার বন্ধু মিলে প্রেমিকাকে রাতভর ধর্ষণ করে খালে নিক্ষেপ


ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জুন ২৫, ২০১৯, ০৮:৩৯ পিএম
চার বন্ধু মিলে প্রেমিকাকে রাতভর ধর্ষণ করে খালে নিক্ষেপ

ঢাকা: বিয়ের কথা বলে প্রেমিকাকে স্থানীয় বাজারে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর মার্কেটের একটি দোকানে নিয়ে চার বন্ধু মিলে সেই প্রেমিকাকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণে অচেতন তরুণীকে মৃত ভেবে খালে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় প্রেমিক শামীম মিয়াসহ তিন বন্ধু। পরে গোংড়ানি শুনে লোকজন উদ্ধার করে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুলিশকে খবর দেয়। সোমবার রাতে এ ধরনের ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের রাজগাতি ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে পুলিশ ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি। গতকাল

স্থানীয় লোকজন ও নির্যাতনের শিকার তরুণী জানায়, তার বাড়ি নান্দাইল উপজেলার উত্তর-পূর্ব দিকের একটি ইউনিয়নে। সে ময়মনসিংহের একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে। গত দুই মাস ধরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয় নান্দাইলের মুশলী ইউনিয়নের চংভেদেরা গ্রামের মো. মজনু মিয়ার ছেলে মো. শামীম মিয়ার (২৫) সাথে। সস্পর্কের এক পর্যায়ে শামীম তাকে কাছে পেতে মরিয়া হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের আগে তার সাথে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। এই অবস্থায় শামীম বিয়ের শর্তে রাজি হয়ে তাকে আনতে গত সোমবার ময়মনসিংহের মাসকান্দা এলাকায় যায়। সেখান থেকে তাকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে রাত ১১টার দিকে নান্দাইলের কালিগঞ্জ বাজারের মার্কেটে নিয়ে যায়। সেখানের একটি দোকানে প্রবেশ করিয়ে আচমকা বাহির থেকে সাটার লাগিয়ে দেয়। এ সময় সে চিৎকার শুরু করে অস্ত্রেরে ভয় দেখিয়ে অন্য আরো চারজনকে ভিতরে এনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। দীর্ঘ নির্যাতনের পর এক পর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে সকালে দেখতে পায় সে বাজারের পাশে  একটি সেতুর নিচে খালে পড়ে রয়েছে। এ সময় তার গোংড়ানিতে লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে কিছু দূরে কালিগঞ্জ-তাড়াইল সড়কের পাশে একটি ক্লাবের পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, থানা পুলিশের একটি পিকআপসহ উপপরিদর্শক মো. লিটন মিয়া এক দল পুলিশ নিয়ে অবস্থান করছে। এ সময় পাশের ক্লাব ঘরে নির্যাতনের শিকার তরুণী দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করছে। এই অবস্থায় তরুণীকে ধমকের সুরে জিজ্ঞসাবাদ করছেন উপ-পরিদর্শক লিটন। নির্যাতনের শিকার তরুণী তখন পুলিশের এ ধরনের আচরণে এক ভীতিকর অবস্থায় তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা করছে। এলাকার উৎসুক লোকজন চারপাশে দাঁড়িয়ে তা প্রত্যক্ষ করছে। পরে সেখান থেকে পিকআপ করে তরুণী তার বাবা ও খালাতো ভাইকে উঠিয়ে ঘটনাস্থল কালিগঞ্জ বাজারে অবস্থিত রাফি মার্কেটের ভিতর নিয়ে যায় হয়। সেখানে রয়েছে অভিযুক্ত শামীমের একটি টেইলার্সের দোকান। এই দোকানের ভিতরেই রাতভর গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে নির্যাতনের শিকার তরুণী তার ওপর চালানো নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরেন। এর পাশেই রয়েছে অন্য অভিযুক্ত রিপনের কম্পিউটারের দোকান। ওই রিপন হচ্ছে পাশের বনাটি গ্রামের কাঞ্চন মিয়ার ছেলে। তাছাড়া অন্য অভিযুক্ত হাবিব হচ্ছে বাহাদুরপুর গ্রামের গনু মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজি চালিত অটোবাইক চালক। আরেক অভিযুক্তের পরিচয় পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় অভিযুক্ত শামীম একাধিক বিয়ে করেছে। তাছাড়া রিপন মিয়া এর আগেও অন্য বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল। পরে প্রতিবারই সালিশ দরবারে টাকা দিয়ে পার পেয়ে যায়।

এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান ও মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!