• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন বাদ, চিন্তা একটাই খালেদার মুক্তি


বিশেষ প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৬, ২০১৯, ০১:০৪ পিএম
নির্বাচন বাদ, চিন্তা একটাই খালেদার মুক্তি

ঢাকা : ভোটের চিন্তা বাদ দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি আবারো জোরালো করতে নতুন কর্মসূচির কথা ভাবছে দলটি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার কারাবাসের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এর আগেই বেশকিছু শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার পর থেকে বিএনপি তার মুক্তির জন্য মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, অনশন, স্মারকলিপি দেওয়ার মতো শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে আসছিল। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের কোনো কর্মসূচি ছিল না। নতুন করে তার মুক্তির দাবিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন নেতারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে বলেছেন, সারা দেশে তাদের বহু নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছেন। অনেকে কারারুদ্ধ। গণতন্ত্রের জন্য যিনি স্বাধীন, সার্বভৌম পতাকা নিয়ে যুদ্ধ করছেন, তাকেও আজ প্রায় এক বছর অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে। এর জন্য আইনি লড়াই যেমন চলবে, তেমনি সাংগঠনিক কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।

আসছে মার্চে সারা দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে, না বর্জন করছে তা নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে ধোঁয়াশা ছিল।

দলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনেই যাবে না বিএনপি। সিদ্ধান্তটি আগে খসড়ায় ছিল, এবার পাক্কা। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠক থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আপাতত নির্বাচনের চিন্তা বাদ। গুরুত্ব দেওয়া হবে দলীয় প্রধান কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়।

একই সঙ্গে সংগঠন শক্তিশালী করতে যা করা দরকার, সে পদক্ষেপ নিতে হবে। আগামী মার্চে কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। তবে শীর্ষপর্যায়ে আলোচনা করে নেতৃত্বের কিছু অদল-বদল করা হবে। দেশে অবস্থানরত নীতিনির্ধারক ছাড়াও বিদেশে থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একমত পোষণ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দল সমর্থিত আইনজীবীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার মামলার সার্বিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন। তার মুক্তির জন্য আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি করণীয় সম্পর্কেও মতামত চেয়েছেন।

অতীতের মতো গতকালও আইনজীবীরা বলেছেন, বিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন; কিন্তু আইন নিজস্ব গতিপথে চলতে পারছে না। অদৃশ্য শক্তি খালেদা জিয়ার মুক্তির লাগাম টেনে ধরেছে। সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সোজাসাপ্টা বলেছেন, আইনি লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। সরকারের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। বিকল্প পথে হাঁটতে হবে।

তবে রাজনীতির হাওয়ায় ভাসছে, বিএনপির সংসদে যাওয়ার ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে। সরকারের তরফ থেকে এমন আভাস-ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্রের স্বার্থেই ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আসা উচিত। বিএনপিকে সিদ্ধান্ত বদলের অনুরোধ জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংখ্যায় কম হলেও বিএনপির বিজয়ীদের সংসদে যাওয়া উচিত। কিন্তু তাতে কান দিতে নারাজ বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির চেয়েও এবারের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের সাধারণ মানুষ ছাড়াও বহির্বিশ্বের কাছে এই সরকারের বৈধতা মিলছে না। সরকারের নৈতিক ভিত্তি দুর্বল।

বিদেশি যারা প্রথম দিকে সাধুবাদ, স্বাগত জানিয়েছিল তারাও এখন নির্বাচনে অনিয়মের কথা বলতে শুরু করেছেন। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্নবিদ্ধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তাদের বৈধতা দেওয়া ছাড়া কোনো লাভ হবে না। তার মতে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাওয়া আত্মহত্যার শামিল।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!