• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ আছে ২১১ জন ডাক্তারের, কর্মরত ৬৩


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯, ০২:৫৬ পিএম
পদ আছে ২১১ জন ডাক্তারের, কর্মরত ৬৩

প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহ : জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে দিনকে দিন রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেলেও ডাক্তারের শূন্য পদে কোনো নিয়োগ নেই। ফলে রোগীর অসহনীয় চাপে চিকিৎসকরা হাফিয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে পান থেকে চুন খসলেই আদালত বা থানায় ডাক্তারদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিচ্ছে রোগীর স্বজনরা। ফলে বেশির ভাগ জটিল রোগী রেফার্ড করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানবিদ জাহাঙ্গীর হাবিব জানান, ঝিনাইদহ জেলায় ২১১ ডাক্তারের পদে মাত্র ৬৩ জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। শূন্য পদ আছে ১৪৮। সূত্রমতে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সহকারী সার্জনের ২০টি পদে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। ১৩টি পদ শুন্য আছে।
এ ছাড়া সিভিল সার্জন অফিসে ১ জন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ৪০ ডাক্তারের মধ্যে ১৭ জন, কালীগঞ্জ হাসপাতালে ৩১ জন ডাক্তারের মধ্যে ৭ জন, মহেশপুর ৩৪ জন ডাক্তারের মধ্যে মাত্র ৪ জন, শৈলকুপায় ২৬ জনের মধ্যে ৭ জন, হরিণাকুন্ডুতে ৩০ জনের মধ্যে ৫ জন ও কোটচাঁদপুরে ২৬ জন ডাক্তারের মধ্যে ৮ জন কর্মরত আছেন। বছরের পর বছর এ সব শুন্যপদে কোন চিকিৎসক পদায়ন করা হয় না। ফলে স্বল্পসংখ্যক ডাক্তার দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এ নিয়ে রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকদের প্রায় বাদানুবাদের ঘটনা ঘটে। হয় আদালত ও থানায় মামলা। তবে রোগীদের অভিযোগ, ডাক্তাররা সময়মতো হাসপাতালে আসেন না। আবার দুপুরের আজান হলেই বাসায় চলে যান। অনেক সময় রোগীদের ভালো মানের ওষুধ থাকলেও দেওয়া হয় না।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এক হাজারের বেশি রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নেন। নির্দিষ্টসংখ্যক বেডের বিপরীতে অসংখ্য রোগী ভর্তি হয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নেন। ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডে এমন চিত্রি প্রতিদিনের। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও উন্নত পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ না পেয়ে রোগীরা দৌড়ান প্রাইভেট ক্লিনিকে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ খালি রয়েছে। অক্সিজেন বিভাগে কোনো টেকনিশিয়ান নেই। ফলে কোটি টাকার বেশি এই প্রকল্প প্রায় অচল হতে বসেছে। অনেক বিভাগে এক্সপার্ট না থাকার কারণে মেশিনপত্র পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ডাক্তাররা কোনো পিয়ন পান না। এক গ্লাস পানি খেতে হলেও নিজে খেতে হয়। অজ্ঞানের ডাক্তারের অভাবে উপজেলা পর্যায়ে অপারশেন সম্ভব হয়ে ওঠে না। জেলা এবং উপজেলা হাসপাতালে এমন চিত্র বহু দিনের হলেও শূন্যপদ পূরণের।

এদিকে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন দুই শতাধিক রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসে। ভর্তি থাকেন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী। এই বিপুলসংখ্যক রোগী ৪/৫ জন ডাক্তারকে সামাল দিতে হচ্ছে। হরিণাকুন্ডু হাসপাতালে ৩০ জন ডাক্তারের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৫ জন। দু’জন ডাক্তার রাতের ডিউটি করে বিশ্রামে গেলে বাকী তিনজন ডাক্তার সামলান দিনের বেলা। এভাবে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে জেলার চিকিৎসা সেবা। ডাক্তার সংকটের কারণে হাসপাতাল গুলো এখন নিজেই রোগী হিসেবে ধুকছে।

ডাক্তার সংকটের বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. রাশেদা সুলতানা জানান, আমরা একাধিক বার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে শূন্যপদ পূরণের কথা বলেছি। কিন্তু পদ পূরণ হয় না। ফলে কর্মরত চিকিৎসকরা ফুসরত পাচ্ছেন না। তিনি বলেন তারপরও এতো কমসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে আমরা রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করছি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!