• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরগুনায় চক্রান্তের শিকার ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র


আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি ডিসেম্বর ১১, ২০১৮, ০৩:৫২ পিএম
বরগুনায় চক্রান্তের শিকার ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র

আমতলী (বরগুনা): দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় নির্মিত হচ্ছে ৩০৭ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত হচ্ছে এটি। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি করছে। যদিও তারা সরকার কিংবা পরিবেশ সংক্রান্ত কোনো সংগঠনের কেউ নয়।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানির সঙ্গে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের  (পিডিবি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বর্তমানে ভূমি উন্নয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট নিশানবাড়িয়া গ্রামেই নির্মিত হচ্ছে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

চীনের পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে আইসোটেক। আগামী ২০২২ সাল নাগাদ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে এ বিদ্যুৎ। চুক্তি অনুযায়ী ২৫ বছর এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, নিশানবাড়ীয়া শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের পাশ্ববর্তী পায়রা নদীর মোহনা থেকে থেকে বালু ড্রেজিং করে প্রকল্পের জমি ভরাটের কাজ চলছে।

এদিকে, প্রকল্পের কাজ খুব দ্রুত এগিয়ে চললেও একটি মহল শুরু থেকেই নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করছে। শুরুতে ওই চক্রটি পাউবো’র জায়গা লিজ সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছিল। বর্তমানে ওই মহলটি শুভসন্ধ্যা সৈকত নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। 
প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সকল প্রকার সরকারি-বেসরকারী অনুমোদনের পরও তারা জনমনে উৎকণ্ঠা ছড়াচ্ছে। তারা প্রচার করছে, ড্রেজিংয়ের কারণে শুভসন্ধ্যা সৈকত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।

রোববার সরেজমিনে শুভসন্ধ্যা সৈকত পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। উপস্থিত অনেকের অভিযোগ, পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করার কারণে সৈকতের কিছু অংশ তলিয়ে যাচ্ছে।

সোহাগ গাজী নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটু একটু করে ভাঙছে সৈকত এলাকা। তবে তা খুবই সামান্য। দীর্ঘ সময় অবস্থান করলে তা চোখে  পড়ে। এছাড়া ওই সৈকতটি পায়রা নদীর মোহনায় অবস্থিত হওয়ায় সেখানে সাগরের ঢেউ আসেনা। ফলে সাগর থেকে বালুও উঠে আসেনা। সব জায়গায় একই অবস্থা। সৈকতের দোকাদাররাও দীর্ঘ সময় ধরে ভাঙনের কথা জানান।

অনেক চেষ্টা করেও বিভ্রান্তি রটনাকারীদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অভিযোগ উত্থাপনকারীদের কেউই ইন্ধনদাতার নাম প্রকাশ করতে চাননি।

এ ব্যাপারে আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈনুল আলম বলেন, “জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পরামর্শ করে শুভসন্ধ্যা সৈকতের পার্শ্ববর্তী পায়রা নদীর মোহনা থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন, সৈকতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বালি উত্তোলন করা যাবে না।  আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে  ন্যূনতম  এক দশমিক ২ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছি। ফলে শুভসন্ধ্যা সি বিচের কোনো ক্ষতি হবার আশংকা নাই। 

বরগুনা জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে গেলে দেশের বিদ্যুত সংকট দূর করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা করা উচিৎ।

বরগুনা-১ আসনের সাংসদ এ্যাডঃ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, তালতলীতে আইসোটেক গ্রুপ ৩০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করছে। এটি  দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলে আর্থসামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!