• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আক্রমণ করলে সমুচিত জবাব: প্রধানমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম মার্চ ১২, ২০১৭, ০৯:৪৮ পিএম
আক্রমণ করলে সমুচিত জবাব: প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে কখনো যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না। কিন্তু কেউ যদি আক্রমণ করে, তাহলে তার সমুচিত জবাব দিতে পারি, সে প্রস্তুতি আমাদের থাকবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা যা যা করণীয়, তা করে যাচ্ছি।’

রোববার (১২ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম নৌ জেটিতে দেশে প্রথমবারের মতো ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামে দুটি ডুবোজাহাজকে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং প্রদানকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ তার সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকবে।’

এ সময় ডুবোজাহাজ দুটির কমান্ডিং অফিসারদের হাতে আনুষ্ঠানিক কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী। কমিশনিংয়ের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে চীন থেকে ক্রয় করা ডুবোজাহাজ দুটির নামফলকও উন্মোচন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে যাতে জনগণের সার্বিক উন্নতি করতে পারি। তবে, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের যা যা প্রয়োজনীয়, তা আমরা সংগ্রহ করব। কারণ, এগুলো হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক।’

দুটি সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়ায় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার হওয়ার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন সক্ষমতা অর্জন করল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের মাত্র গুটিকতক দেশ সাবমেরিন পরিচালনা করে থাকে। সেই তালিকায় আজ থেকে বাংলাদেশের নাম স্থান পাবে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার একটি বিষয়।’

দেশের সংকটময় মুহূর্তে সাবমেরিন দুটি আত্মরক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যে বর্তমান সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে, ইনশা আল্লাহ।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নৌঘাঁটিতে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম নৌঘাঁটির কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. আবু আশরাফ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীকে নৌবাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী পরে ত্রিমাত্রিক ফোর্স হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিএনএস বঙ্গবন্ধু এবং নৌ কমান্ডোদের মহড়াও প্রত্যক্ষ করেন। দুটি হেলিকপ্টার এবং দুটি এমপিএ বিমানও মহড়ায় অংশ নেয়।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সাবমেরিন রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় সহায়তার জন্য স্থাপনার উদ্বোধন এবং বিএনএস শেখ হাসিনা নামের একটি পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি সাবমেরিন দুটি ঘুরে দেখেন এবং সাবমেরিনের যাবতীয় সক্ষমতার বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র এবং দেশ ও জাতির শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, গেল ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর চীনের বন্দর থেকে সাবমেরিন দুটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। এর আগে ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে হস্তান্তর হরা হয়। ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন দুটি ৭৬ মিটার লম্বা এবং ৭ দশমিক ৬ মিটার প্রশস্ত এবং অত্যাধুনিক টর্পেডো ও মাইন সজ্জিত। সাবমেরিন দুটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল এবং এর ওজন ১ হাজার ৬০৯ টন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সাবমেরিন দুটি পরিচালনার জন্য দুই দেশের নৌবাহিনীর সদস্যদের ট্রায়াল এবং প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।

সোনালীনিউজডটকম/এন

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!