• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘আগামী নির্বাচন অনিশ্চিত’


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২, ২০১৭, ০২:২৬ পিএম
‘আগামী নির্বাচন অনিশ্চিত’

ঢাকা : ক্ষমতাসীন সরকারকে অতি দুর্বল আখ্যা দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আগামী নির্বাচন অনিশ্চিত। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেই।

আগামী নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন অনিশ্চিত। কারণ শেখ হাসিনাকে কেউ আশ্বস্ত করতে পারেনি যে ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে গেলে ধরা খেয়ে ফেরত আসতে পারবে। একটি নির্বাচনী ধোঁয়া তুলে বিএনপি এবং জনগণকে অন্ধকারে রাখার চক্রান্ত হচ্ছে।

আজ সোমবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়না। আন্দোলনের শিরোপা যাদের মাথায় উঠবে বিজয়ী তারাই হবে। সরকারের আয়ু আর বেশিদিন নেই। তাদেরকে যেতে হবে। অবিলম্বে নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে সব দলের অংশগ্রহণ এবং ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচন অবশ্যই জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ‘অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ মিশনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সুইডেন শাখা।

সংগঠনের উপদেষ্টা ও সাবেক যুবদল নেতা মিজান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়াম্যার বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ।

ক্ষমতাসীন সরকার কূটনৈতিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সাথে বেশি চালাকি করতে গিয়ে  ধরা খেয়েছে মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, বিশ্বের কাছে ধরা খেলেও প্রধানমন্ত্রীর কোনো আসে যায়না। এর মধ্যদিয়ে তিনি বাংলাদেশকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলেছেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, আজকে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা আসছে। এ নিয়ে আমাদের মাঝে ইমোশন কাজ করছে। কিছুদিন পরে ইমোশন থাকবেনা। কারণ ইমোশন অলওয়েজ স্ট্রংগার দ্যান রিয়েলিটি। বাস্তবতা বুঝতে পারলে আমরা আজকের মতো সেদিন কথা বলবোনা। কারণ রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য স্থায়ী সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।

যে পরিমাণ রোহিঙ্গা এসেছে তাদেরকে ফেরত পাঠাতে যদি মিয়ানমারকে চাপে না রাখা যায়, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে যদি চাপে না রাখা যায় তবে তা সঙ্কট হয়ে দাঁড়াবে। আজকে বৃহত্তম শক্তিগুলো মিয়ানমারের কুকীর্তিকে সমর্থন করছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতও মিয়ানমারের কাছে আত্মসমর্পন করছে। কারণ মিয়ানমার থেকে একজন রোহিঙ্গাও যেন তার দেশে যেতে না পারে।

তিনি সরকারের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, মানিবকভাবে আমরা বিষয়টি অবশ্যই দেখবো। সে হিন্দু না মুসলিম না অন্য কেউ? বিষয়টি হলো মানুষের ওপর নিষ্ঠুর আচরণ। তাদেরকে স্বদেশে বসবাস করতে দেবেনা এটাকে অবশ্যই আমরা ঘৃণা করবো এবং প্রতিবাদ করবো।

আমরা যুদ্ধ করবোনা! কিন্তু বিদেশে আমরা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিবো। বিদেশের মাটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবো। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবোনা। তবে এই যে এতোবড় সেনাবাহিনী এটা কি শোভা বর্ধনের জন্য? নাকি শান্তি রক্ষার জন্য?

বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় আমরাও প্রতিবেশি দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। নিজ দেশে ফেরত এসে দেশের জন্য যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু ভারত সরকার যদি শুধু আমাদেরকে খাওয়াত, পরাত আর রেশন দিত তাহলে তো আমরা এটা করতে পারতামনা।

আজকে রোহিঙ্গারাও এসেছে। মানবিক কারণে তাদেরকে আমাদের আশ্রয় দিতেই হবে। তবে এই মানবিকতা যেন কারো নোবেলের উপলক্ষ্য না হয়। হাজারো মানুষের কান্না আর নির্যাতনকে সম্বল করে তিনি নিজের নোবেলের জন্য পাগল। আরে নীলক্ষেত আর বাংলাবাজারে তো নোবেল পাওয়া যায় সেখান থেকে কিনে নিলেই হয়। শান্তির জন্য কেউ নোবেল পেলেতো আগে সন্তু লারমা পাবে। সেও আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনেক সন্ত্রাস করেছে।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে অশান্তি, গুম, খুন ও মিথ্যাবাদির জন্য শেখ হাসিনা নোবেল পেতে পারেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকার অতিমাত্রায় দুর্বল সরকার। এ জন্যই তাদের হাঁকডাক ও চেঁচামেচি বেশি, হুমকি বেশি। কারণ দুর্বল লোকই চিৎকার করে বেশি। আসলে বর্তমান সরকারের মতো দুর্বল সরকার পৃথিবীতে কোথাও আছে কিনা জানা নেই। কিন্তু তারা বহাল তবিয়তে আছে। তবে বেশিদিন সময় নাই।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডনে অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা বলেন বেগম খালেদা জিয়া আর আসবেননা তারা অপেক্ষা করুন। আর দেখুন প্রধানমন্ত্রী নিজেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসেন কিনা? কারণ পরিবেশ পরিস্থিতি আপাতত তার কাছে ভয়ের কারণ না হলেও তিনি যখন হাটেন নিজের ছায়া দেখে ভয় পান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!