• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে স্বাস্থ্য সতর্কতা


ডা. জাকির হোসেন জুলাই ৬, ২০১৬, ১১:১৬ এএম
ঈদে স্বাস্থ্য সতর্কতা

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদুল ফিতরের আগে রমজান মাসে রোজাদার মুসলমানরা দীর্ঘ একমাস রোজা রাখেন। রমজান মাসে তাই রোজাদার ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাসের ধরন স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য সময় থেকে একটু ভিন্ন।

দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনের জন্য মানব শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সিস্টেম যেমন কিডনি সিস্টেম, ডায়াজেস্টিভ সিস্টেম এবং লিভারের মধ্যে ফিজিওলজিক্যাল অনেক পরিবতর্ন সাধিত হয়। কারণ দীর্ঘসময় পানাহার থেকে বিরত থাকার ফলে মানব শরীরে যে প্রয়োজনীয় পানি ও পুষ্টির ঘাটতি পড়ে তা পূরণ করার জন্য এই সকল সিস্টেমের কার্যক্ষমতার ব্যাপক পরিবর্তন করতে হয়।

সিয়াম সাধনার পরই ঈদুল ফিতরের দিন মুসলমানদের ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় বাহারি সব খাবার। এ সকল বাহারি খাবারের সমাহার দেখে অনেকে অতি উৎসুক হয়ে নিয়মতান্ত্রিক খাদ্য গ্রহণের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তাই ঈদুল ফিতরের দিন অতি উৎসুক না হয়ে খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে সবাইকে থাকতে হবে একটু সচেতন।

কেননা এই একদিনেই পুরনো প্রায় একমাসের খাদ্যাভ্যাসে চলে আসে পরিবর্তন। এর ফলে পরিপাকতন্ত্রের নানা জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা থাকে। এতে করে হতে পারে বদহজম, পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা, বমি, ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যা। ঈদের দিন প্রথমেই হঠাৎ করে বেশি বেশি খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়ানো ভালো। ঈদের দিন মিষ্টি, কেক, বাদাম, চর্বিযুক্ত খাদ্য খেতে হবে খুবই কম পরিমাণে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ ও মসলাযুক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকেও যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে।

ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই ঈদের দিনের খাবারের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। ওই দিন অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি ও চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করার ফলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে চিনির পরিমাণ অতি মাত্রায় বেড়ে ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস হয়ে কোমায় চলে যেতে পারেন। চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

বাজারে দেশি-বিদেশি যে সকল জুস পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশিরভাগই আসল ফলের রস নয়। কৃত্রিম রং ও সুগন্ধি দিয়ে জুস নামের এসব পানীয় তৈরি করা হয়। এইসব পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এই সকল পানীয় পান করলে পরিপাকতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হতে পারে। এই সকল জুস এর পরিবর্তে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। বাসার তৈরি করা লেবুর শরবতও পান করা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

পোলাও, বিরিয়ানি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত না খেয়ে সবুজ শাক-সবজি খেলে পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন উপসর্গ থেকে উপশম পাওয়া যায়। যারা সারা মাস সিয়াম সাধনা করেছেন তারা অবশ্যই ঈদুল ফিতরের দিন সকালবেলা খালি পেটে এন্টি আলসারেন্ট জাতীয় ওষুধ খেতে ভুলবেন না। সেই পরিমাণে অল্প খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পানি খাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।

লেখক : চিকিৎসক ও কলামিস্ট

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!