• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উপজাতীয়দের রাজ্য ঘোষণার দাবিতে অবরোধ ভারতে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ১১, ২০১৭, ০৬:৪৬ পিএম
উপজাতীয়দের রাজ্য ঘোষণার দাবিতে অবরোধ ভারতে

ঢাকা: এবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের টিপ্রার অধিবাসীরাও স্বতন্ত্র রাজ্য ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। কর্মসূচি ঘোষণা করেই রেল, সড়ক ও নৌপথে অবরোধ শুরু করেছে। ফলে রাজ্যর সঙ্গে যোগাযাগ বিচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে টিপ্রাল্যান্ডের।

পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের গোর্খাল্যান্ডের দাবির মতো স্বাধীন টিপ্রাল্যান্ডের আন্দোলনে নেমেছেন উপজাতীয়রা। শুধু তাদের জন্যই আলাদা রাজ্যের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন উপজাতীয়রা। তবে স্থানীয় অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এই দাবির বিরোধিতা করছে। ইন্ডেজিনিয়াস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা(আইপিএফটি) দলের নেতারা এই কর্মসুচির ঘোষণা দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে ২৩ কিমি দুরে উপজাতিয় ঘনবসতি এলাকা হিসেবে টিপ্রাল্যান্ড পরিচিত, এই এলাকাকে স্বতন্ত্র রাজ্য হিসেবে ঘোষণা কতে হবে। 

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার(১০ জুলাই) অবরোধ ঘোষণার প্রথম দিনেই তারা রাজধানীর সঙ্গে সকল যোগাযোগ বিচ্ছন্ন করে দিয়েছেন। ফলে এই এলাকা দিয়ে কোনো যান-বাহন চলাচল করতে পারছে না।

ত্রিপুরার উপজাতিদের উন্নয়নের কথা বলে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আইপিএফটির এনসি দেববর্মা গোষ্ঠী। রাজ্যের ‘জীবন রেখা’ বলে পরিচিত জাতীয় সড়ক ও রেলপথ এ অবরোধের লক্ষ্য। রাজধানী আগরতলার অদূরে খামতিংবাড়ি ও সাধুপাড়ায় কয়েক হাজার পিকেটার এই অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেন। তবে রেলকর্তারা আগে থেকেই ত্রিপুরায় ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই অবরোধ কর্মসূচিতে অনেকেই মণিপুরের ছায়া দেখছেন। কারণ, মণিপুরে ভোটের আগে কংগ্রেস সরকারকে বিপাকে ফেলতে একইভাবে সাড়ে চার মাস অবরোধ করেছিল ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিল। ত্রিপুরার শাসক দল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর সাংবাদিকদের কাছে সরাসরি অভিযোগ করেছেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দপ্তর থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের কমিউনিস্ট সরকারকে বিপাকে ফেলতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি রাজ্যভাগের দাবি ও সেই দাবির সমর্থনে অবরোধ কর্মসূচিকে অযৌক্তিক বলে বর্ণনা করেছেন।

অবরোধ কর্মসূচির বিরোধিতা করেছে কংগ্রেসও। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিত সিনহা বলেন, রাজ্যভাগ কিছুতেই তারা মানবেন না। কড়া হাতে রাজ্যকে অবরোধমুক্ত করার দাবি তোলেন তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে গোপনে মদদ দেয়ার অভিযোগ উঠলেও দলের মুখপাত্র অরুণকান্তি ভৌমিক বলেন, তারা টিপ্রাল্যান্ডের দাবির বিরোধী। অবরোধের রাজনীতিও সমর্থন করেন না।

ভারতের অন্যতম প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরার সঙ্গে গোটা দেশের সড়ক ও রেলযোগাযোগ-ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ায় ব্যাপক জনদুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে। বর্ষায় এমনিতেই প্রতিবছর পাহাড়ি রাজ্যটিতে যোগাযোগব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। এবার এই অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ব্যবসায়ীদের চিন্তা বাড়াচ্ছে। ত্রিপুরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এম এল দেবনাথ ফোনে বলেন, অবরোধ বেশি দিন চললেই বিপদ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে টান পড়বে।

তবে অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল এনসি দেববর্মা। এদিকে ত্রিপুরার উপজাতীয় গোষ্ঠীর এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপক পুলিশি বন্দোবস্ত করা হয়। অবরোধকারীদের ঘিরে রাখেন পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা। তবে অন্তত বিকেল পর্যন্ত কোনো সংঘাতের খবর নেই।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!