• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এক সময় মনে হচ্ছিল আমি তাদের যৌনদাসী


আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ২, ২০১৮, ০৩:৪৩ পিএম
এক সময় মনে হচ্ছিল আমি তাদের যৌনদাসী

হয়রানির শিকার মারচু গিরমা

ঢাকা: বিশ্বব্যাপীই উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে নারী যৌন হয়রানির ঘটনা। ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জাতিসংঘের দপ্তার পর্যন্তও এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে বলে খবর বেরিয়েছে। এবার এলো লন্ডনের ঘরে ঘরে যৌন হয়রানির খবর। 

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন লন্ডনে আশ্রয়প্রার্থী এক নারী। তিনি প্রায় ২০ বছর যাবৎ সেখানে বাস করছেন। ভয়বহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এক সময় আমার মনে হচ্ছিল যেন আমি এ দেশে যৌনদাসী হিসেবে আছি।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেহেতু তারা ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থী, ফলে তারা পুলিশের সাহায্য চাইলে বা তাদের হয়রানির ঘটনা প্রকাশ করলে তাদেরকেই ব্রিটেন থেকে বের করে দেয়া হতে পারে।

তবে, এই ভয় থেকে এখন অনেকে বেরিয়ে আসছেন। অনেকে মুখ খুলছেন। ৩৭ বছর বয়স্ক গ্রেস বেশ কয়েকবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি জানান, বৃটেনে তার মতো বহু আশ্রয়প্রার্থী নারী প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানির শিকার হন। এ কারণে তারা চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

তিনি যে আশ্রয়প্রার্থী, এই সুযোগ নিয়ে অনেকে প্রতারণা করেও যৌন হয়রানি করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। গ্রেস ১৭ বছর বয়সে লন্ডনে এসেছেন ১৯৯৮ সালে। সেই থেকে দুই দশক লন্ডনে তার আশ্রয়প্রার্থীর জীবন সুখের নয়।

তার জন্ম পশ্চিম আফ্রিকায় এক দরিদ্র পরিবারে। কিন্তু আত্মীয় স্বজনের নির্যাতনের কারণে দেশ ছেড়ে লন্ডনে আসেন। গ্রেস এর পরিবার এতটাই দরিদ্র ছিল যে, তাকে পনেরো বছর বয়সে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়েছিল।

গ্রেস ও তার দুই বছরের বড় বোনকে একই ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেই ব্যক্তির বয়স গ্রেসের বাবার বয়সের চাইতেও বেশি।

বিয়ের পর দুই বোনকে তাদের বৃদ্ধ স্বামী যখন তার বাড়িতে নিয়ে গেলো, তখন তারা দেখলেন, লোকটির আরো পাঁচজন স্ত্রী আছে।

তবে ঐ বাড়িতে গিয়ে তাদের দুই বোন প্রথমবারের মতো একটা চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পেরেছিলেন। সেটা হলো, একবেলা খাওয়ার পর পরের বেলার খাবারের জন্য চিন্তা করতে হতো না।

দুই বোনই বৃদ্ধ স্বামীর কাছে দিনের পর দিন যৌন হয়রানি শিকার হতে লাগলেন। সেই ব্যক্তি রাজনৈতিকভাবে বেশ ক্ষমতাধর। হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন অবস্থান নেয়াও কঠিন ছিল।

তারা লন্ডনে কিভাবে এলেন?
বিয়ের দু’বছর পর গ্রেসের চাচা সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি দুই বোনকে পালিয়ে পর্যটক ভিসায় লন্ডনে পাঠিয়ে দেন। তার সেই চাচার এক বন্ধু লন্ডনে হিথরো বিমানবন্দর থেকে তাদের স্বাগত জানান এবং দুই বোনকে একটি গীর্জায় নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আসা কয়েকজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

তারা দুই বোনই লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী একটি পরিবারের সাথে উঠেছিলেন।

লন্ডনে কিভাবে প্রথম যৌন হয়রানি শিকার হন গ্রেস?
গ্রেস তার বোনকে নিয়ে লন্ডনে যে পরিবারটির বাড়িতে উঠেছিলেন। সেই বাড়িতে ড্রয়িংরুমে গ্রেসকে থাকতে হতো। কয়েকদিন এভাবে থাকার পর গ্রেস ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। যখন সবাই ঘুমিয়ে যায়, তখন গভীর রাতে বাড়ির কর্তা উপর তলা থেকে নেমে আসেন ড্রয়িংরুমে।

তিনি গ্রেসকে যৌন নির্যাতন শুরু করেন। বাড়ি থেকে বের করে দিলে গ্রেস কোথায় যাবেন, সেই ভয়ে গ্রেস তা প্রকাশ করতে পারেননি। বিশ বছরে লন্ডনে তিনি আরো অনেক বাড়িতে থেকেছেন এবং প্রায় সব জায়গাতেই তিনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। 

তার মতোই লন্ডনে অনেক আশ্রয়প্রার্থী নারীর এমন অনেক গল্প আছে, যা এখন অনেকেই প্রকাশ করছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!