• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এতজনকে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয় : জয়


কূটনৈতিক প্রতিবেদক জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ০১:২৮ পিএম
এতজনকে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয় : জয়

ঢাকা : বাংলাদেশ-মিয়ানমার চুক্তির পরও আসছে রোহিঙ্গারা। অন্যদিকে নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কায় বাংলাদেশ সরকার চাইছে দ্রুত চুক্তির বাস্তবায়ন। এজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদারে ভারতের পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বের সমর্থনও চায় বাংলাদেশ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার চুক্তি সই হওয়ার পর গত বুধবার ভোররাতেও ৫৩ রোহিঙ্গা নাফ নদী হয়ে অনুপ্রবেশ করেছে। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালেও এসেছে ৬০ জন। আরো অনেকেই আসার অপেক্ষায়। তাদের অভিযোগ, রাখাইনে এখনো সেনা নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

ওয়াশিংটন পোস্ট গতকাল এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশটির বেশি রোহিঙ্গা সংগঠন চুক্তি নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, ন্যূনতম শর্ত হিসেবে নাগরিকত্ব, চলাচলের স্বাধীনতা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকলে প্রত্যাবাসন চুক্তিকে তারা স্বাগত জানাবে না। কারণ এখনো তারা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকার ও সেনাবাহিনীর মনোভাবের কোনো পরিবর্তন দেখছে না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের পরিচালক কেইট অ্যালেন গার্ডিয়ানে প্রকাশিত তার রোহিঙ্গা বিষয়ক মতামতে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কাছে কেউ জানতেই চাইছে না আসলে তারা কী চায়। বিভিন্ন শিবিরে ঘুরে তিনি জেনেছেন যে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের শিবির ছেড়ে মিয়ানমারের ভেতরে কোনো ক্যাম্পে যেতে ইচ্ছুক নয়।

বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ‘সম্ভব হলে’ দুই বছরের মধ্যে বাস্তুচ্যুত প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে রাখাইনে ফেরানো নিয়ে খোদ জাতিসংঘ মহাসচিব উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আরো অনেক সংস্থা বলেছে, রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরে সেনা তত্ত্বাবধানেই থাকতে হবে। অথচ জাতিসংঘকেও দেশটি আমলে নিচ্ছে না। মিয়ানমারে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে বাংলাদেশ সফরে আছেন মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি। তিনি এখন কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করছেন।

খোদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই এ চুক্তিতে থাকা প্রত্যাবাসনের সময়সীমা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফিরতে রাজি করানোর বিষয়টি তো রয়েছেই। অন্যদিকে ফিরে যাওয়ার খবরে রোহিঙ্গারা এখন আতঙ্কে। গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ নূর বিবিসিকে বলেন, চুক্তির খবর শুনে তাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারে এখনো ফেরার মতো নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।

জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার-ইউএনএইচসিআর ঢাকার একজন মুখপাত্র জোসেফ ত্রিপুরা বলেন, তাদের ফিরে যাওয়াটা স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে হয় কি না সেটা দেখতে হবে। পাশাপাশি কয়েক মাস পর যেন তাদের আবার ফেরত না আসতে হয়।

এদিকে বাংলাদেশ মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে জোরদার করেছে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। দিলি­ সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা চান। নয়াদিল্লিস্থ মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক নৈশভোজেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কার্যকর করতে তাদের সমর্থন চেয়েছেন।

জাপানি সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটে এক নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি লিখেছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরগুলো উগ্রবাদের চারণভূমি হয়ে উঠতে পারে, যা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। সেই সঙ্গে আমাদের নাগরিকদেরও সুরক্ষা দিতে হবে সরকারকেই।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!