• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করল্লা শুধু তেতোই নয়!


লাইফস্টাইল ডেস্ক এপ্রিল ১৫, ২০১৭, ০৯:০৮ পিএম
করল্লা শুধু তেতোই নয়!

ঢাকা: বাঙালি মাত্রই ‘করল্লা’ সবজির সঙ্গে কমবেশি পরিচিত আছে। তবে পছন্দের চাইতে অপছন্দের তালিকাই বড়। তিক্ত স্বাদের জন্য অনেকেই, বিশেষ করে শিশুরা তো কোনো মতেই খেতে চায় না করল্লা। অবশ্য ভোজন রসিক বাঙালিই কেবল বোঝেন করল্লার আসল স্বাদ।

বেশি করে পিঁয়াজ দিয়ে ঘিয়ে ভাজা করল্লা-আলু, করল্লা দিয়ে কুচো চিংড়ি, ডাল দিয়ে করল্লার চচ্চড়ি কিংবা ইলিশ মাছের কাঁটা কুটো দিয়ে মাখো মাখো করল্লা... আহ! আর ইলিশ বা রুই মাছের ডিম দিয়ে করল্লা ভাজার যে স্বাদ, মুখের সঙ্গে লেগে থাকবে একবার খেলে।

লম্বা করল্লা

হতে পারে করল্লা বিচ্ছিরি তেতো। তবে কিন্তু এই তেতো হওয়াটাই এর স্বাদ। জেনে রাখা ভালো, খাবারের শুরুটা তেতো দিয়ে হলেও মুখের মাঝে তা কিছু বিশেষ এনজাইমের সক্রিয়তা বাড়ায়। ফলে খাদ্য হজম হয় দ্রুত ও সহজে। একারণেই তা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। 

শত বছর ধরে চীন ও ভারতে তথা গোটা এশিয়াতেই করল্লা ব্যবহৃত হয়ে আসছে ডায়বেটিসের ওষুধ হিসেবে। এতে প্ল্যান্ট ইনসুলিন আছে যা রক্তে গ্লুকোজ লেভেল কম রাখে। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান অঞ্চলের আদিবাসীরাও বহু বছর ধরেই করল্লাকে ডায়াবেটিস, পেটের গ্যাস, হাম ও হিপাটাইটিসের ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। ব্যবহার করে আসছে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, ম্যালেরিয়া জ্বরে ও মাথা ব্যথায়ও। 

ঝুলে থাকা করল্লা

করল্লা জন্মায় বিষুবীয় অঞ্চলে। এশিয়া, পূর্ব আফ্রিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ আমেরিকায় বেশি দেখা যায়। করল্লার আছে পালং শাকের চেয়ে দ্বিগুণ ক্যালশিয়াম আর কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম। আছে যথেষ্ট লৌহ, প্রচুর ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’ এবং আঁশ। ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ এন্টি অক্সিডেন্ট, যা কিনা শরীরের কোষগুলোকে রক্ষা করে; বার্ধক্য ঠেকিয়েও রাখতে পারে। আরো আছে লুটিন আর লাইকোপিন। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। লাইকোপিন শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্টও বটে। 

ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর ক্যান্সার সেন্টারের গবেষণায় দেখা গেছে, করল্লা অত্যন্ত সফল ভাবে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়াও রক্তের চর্বি কমায় করল্লা। পাশাপাশি ভালো কলেস্টেরল এইচডিএল বাড়ায়। ক্রিমিনাশক হিশাবেও করল্লার তুলনা মেলা ভার।

করল্লার জুস

করল্লা ভাইরাস নাশক হিসেবেও সমান কার্যকারী। হিপাটাইটিস এ, হারপিস ভাইরাস, ফ্লু, ইত্যাদির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। লিভার ক্যান্সার, লিউকেমিয়া, মেলানোমা ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে পারে। করল্লার ল্যাক্সেটিভ পায়খানাকে নরম রাখে ও কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। জীবাণুনাশী-বিশেষ করে ই কোলাই নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর। ফলে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ হয়।

এছাড়া করল্লা নানান রকম চর্মরোগ প্রতিরোধ করতেও অত্যন্ত কার্যকর। করল্লার জুস লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়; রক্ত পরিশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই করল্লা শুধু তেতোই নয়, এর রয়েছে শত গুণ। বাংলাদেশে করল্লার আরেকটি নাম প্রচলিত আছে- ‘উস্তা’। সূত্র: স্বাস্থ্যবার্তা।

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!