• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খঞ্জনির তালে জীবন চলে বাউল নুরের


রাজশাহী প্রতিনিধি ডিসেম্বর ৩, ২০১৬, ০৮:৪১ পিএম
খঞ্জনির তালে জীবন চলে বাউল নুরের

রাজশাহী : সেই ৬০ বছর আগের কথা। তখন পনের বছর বয়স। গ্রামের তো দুরের কথা শহরেও ছিলো না আধুনিক যন্ত্রের ছোঁয়া। শহরের অভিজাত শ্রেণির মানুষের বিনোদনের একমাত্র ব্যবস্থা ছিলো রেডিও। আর গ্রাম কিংবা শহরে মানুষ জারি, কিচ্ছা, আলকাপ, ভাওয়ালী গানের মাধ্যেমে তাদের বিনোদন খুঁজতো। গ্রামে গ্রামে বসতো এ সব গানের আসর। এসব গানের আসরের দাদা, বাবার সঙ্গে আসা। সেই থেকে ভালোবাসা। গান শুনেই মনে ধরে যায়। সেই ভালোলাগা। তাতেই বুদ হয়ে থেকে কেটে গেছে জীবনের ৬০টি বসন্ত। আজও খঞ্জনি বাজিয়ে গান গেয়ে চলে জীবন।

নিজের জীবনের কথা এভাবেই বললেন রাজশাহীর তানোরের গোকুল গ্রামের বাউল শিল্পি নুর মোহাম্মদ(৭৫)। পুরো নাম নুর মোহাম্মদ হলেও এলাকায় তিনি পরিচিত নুর বাউল নুর বলে।

মুখ ভর্তি সাদা কালো দাড়ি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। মাথায় গোল টুপি। দুই হাতের ছয় আঙ্গুলে বড় বড় রঙ্গিন পাথরের আংটি। গায়ে সাদা পাঞ্জাবি। ঘাড়ের উপর সাদা গামছা। হাতের মুঠে মধ্যে ঢোকানো পুরানো বাদ্য খঞ্জনি। গানই তার নেশা, গানই তার প্রাণ, গানই তার পেশা, গান নিয়েই তার সকল কাজ কর্ম, গানেই তার ধ্যান জ্ঞান, জীবন জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।

নুর মোহাম্মদ জানান, গান শুনে যে যা বখশিস দেয় তা দিয়েই চলে তার সংসার। গ্রামাঞ্চলে একসময় বাউল গানের আসর বসলেও বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বাউল গানের আসর তেমন জমে উঠেনা। এক সময় তার যথেষ্ট কদর থাকলেও এখন আর নেই। এখন খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে তার সংসার।

তিনি আরো জানান, সংসারে তিন ছেলে, তিন মেয়ে ও স্ত্রী মিলে সাত সদস্যের পরিবার। ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়ে সংসার পাতলা হয়েছে। বুড়ো হয়ে গেলেও তার হাত থেকে খঞ্জনি নামে না। আগের মত কোন অনুষ্ঠান না পেলেও মাজার, গ্রামের কোন অনুষ্ঠান হলে তার ডাক পড়ে। তবে আগের মত হয় না। মাসে, দুই মাসে দুই একটি জায়গায় থেকে ডাক পড়ে। তার গ্রামসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে বিভিন্ন গ্রামে বাউল নুর বলে বেশ পরিচিতি রয়েছে। তবে তার নির্ধারিত কোন ফি না। খুশি মনে যা দেয় তা নিয়েই খুশি থাকেন তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!